ফের স্বাস্থ্যকর্মীর উপর হামলার অভিযোগ উঠল পশ্চিমবাংলায়। এক মদ্যপ ব্যক্তি নার্সের উপর জোরদার হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তাতে সেই নার্সের মাথায় ২২টি সেলাই পড়েছে। ঘটনা বীরভূম জেলার মহম্মদবাজারের কাইজুলি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (বিপিএইচসি)। আর এই ঘটনাই পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে আরও একবার গুরুতর প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় এক নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি নার্সের উপর নির্মমভাবে হামলা চালায়। যার ফলে নার্সের মাথায় পড়েছে ২২টি সেলাই।
কী জানিয়েছে পুলিশ?
যেই নার্সের উপর হামলা হয়, তাঁর নাম রিনা মণ্ডল। তিনি ডিউটি শেষ করে বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখন এক স্থানীয় মদ্যপ ব্যক্তি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রবেশ করে। তিনি ওষুধ চান। যদিও সেই মদ্যপ ব্যক্তির দাবি মানতে চাননি রিনা মণ্ডল। সেই কারণে শুরু হয়ে যায় তর্ক। এমন পরিস্থিতিতে আকস্মিক সেই ব্যক্তি পাথর তুলে বারবার নার্সকে আঘাত করে। যার ফলে মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে নার্সের।
তখন তিনি চিৎকার করেন। সেই চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা ধরে ফেলে অভিযুক্তকে। অভিযুক্ত রাজীব কাহার ওই এলাকারই বাসিন্দা।
এই ঘটনার পরই ওই নার্সকে সিউরি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত চিকিৎসকেরা তাঁর মাথায় ২২টি সেলাই করেন।
জন্মেছে ক্ষোভ
এই ভয়ঙ্কর হামলার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়েছে এলাকা। জন্ম নিয়েছে ক্ষোভ। আর এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করল যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নারী নিরাপত্তা এখনও প্রশ্নের মুখে। তাই সেখানকার বাসিন্দারা এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা হাসপাতালের সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি করেছেন। পাশাপাশি তাদের প্রশ্ন, 'যদি হাসপাতালের প্রাঙ্গণে নার্সরা নিরাপদ না থাকে তবে সাধারণ নাগরিকরা কীভাবে নিরাপদ বোধ করবেন?'
একের পর এক ঘটনা ঘটেছে
এই রাজ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলার ঘটনা নতুন নয়। এই রোগ বহু পুরনো বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহল মহল। আর সেই অসুখ এখনও সারার লক্ষণ নেই। তাই তো আরজিকর থেকে দুর্গাপুর মেডিক্যাল, প্রতিটি জায়গায় মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর চলছে অত্যাচার। আর সেই ঘটনাপ্রবাহেরই নবতম সংযোজন হল বীরভূমের এই ঘটনা বলে মনে করছেন তারা। তাই তারা হাসপাতালে নিরাপত্তা বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করছেন। এখন দেখার প্রশাসন এখন ঠিক কী ব্যবস্থা নেয়। তার উপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।