• আলোর উৎসবে চোখে হারাল ১৪ শিশু, মধ্যপ্রদেশে আতঙ্কের অপর নাম ‘কার্বাইড বন্দুক’
    প্রতিদিন | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আলোর উৎসব দীপাবলিতে চোখের রশ্নি হারাল ১৪ শিশু। আহতের সংখ্যা বহু। তাঁদের অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। নেপথ্যে দেশি খেলনা বন্দুক যার পোশাকি নাম ‘কার্বাইড গান’।

    মর্মান্তিক ঘটনাটি মধ্যপ্রদশের। এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় টিন বা পাইপের তৈরি বন্দুক নিয়ে খেলতে গিয়ে চোখ ও শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে মারাত্মক আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। তবে চোখের আঘাত নিয়ে ভর্তির সংখ্যাই বেশি। বিগত ৩ দিনে মধ্যপ্রদেশজুড়ে ১২২-এর বেশি শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ জন দৃষ্টি হারিয়েছে বলে খবর। ভোপাল, ইন্দোর, জব্বলপুর ও গোয়ালিয়রের একাধিক হাসপাতালের চক্ষু ওয়ার্ডগুলি রোগীদের ভিড় চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের কপালে। শুধুমাত্র ভোপালের হামিদিয়া হাসপাতালেই ৭২ ঘণ্টায় ২৬ জন শিশু ভর্তি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

    পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় মেলা ও রাস্তার ধারে বিভিন্ন দোকানে বন্দুকগুলি বিক্রি হচ্ছে। মানা হচ্ছে না কোনও নিরাপত্তা বিধি। লাগাতার অভিযোগ আসার পর ১৮ অক্টোবর থেকে এই বন্দুকগুলি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। বিদিশা জেলার পুলিশ অবৈধ এই বন্দুক বিক্রি করার অপরাধে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। স্থানীয় পুলিশকর্তা আরকে মিশ্র বলেন, “তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই কার্বাইড বন্দুকগুলি যারা বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তারপরও বেআইনিভাবে তা বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। অনেক বাচ্চা ভিডিও দেখে সেই বন্দুক তা বানাতে গিয়ে বিপত্তি ঘটাছে। কিন্তু এই বন্দুক থেকে এত বড় ক্ষতি হচ্ছে কী করে?

    প্লাস্টিক বা টিনের পাইপ ব্যবহার করে  ‘কার্বাইড বন্দুক’ তৈরি করা হচ্ছে। যার ভিতরে বারুদ, দেশলাইয়ের কাঠি ও ক্যালসিয়াম কার্বাইড ভরা হচ্ছে। তাতে আগুন দেওয়ার পর সেগুলি ফেটে যাচ্ছে। তা চোখে গিয়ে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। হামিদিয়া হাসপাতালের সিএমএইচও ডাঃ মনীশ শর্মা বলেন, “এই খেলনাটি সরাসরি চোখের ক্ষতি করেছে। বিস্ফোরণের ফলে ধাতব টুকরো, কার্বাইডের বাষ্প রেটিনা পুড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা বেশ কয়েকটি রোগী পেয়েছি যেখানে শিশুদের চোখের স্নায়ু ফেটে গিয়েছে। ফলে স্থায়ী ভাবে দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলছে তারা।”

    হামিদিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নেহা জানিয়েছে , “আমি কার্বাইড বন্দুক কিনেছিলাম। ওটা ফেটে যায়। আমার একটি চোখ সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।” আরেকজন ভুক্তভোগী রাজ বিশ্বকর্মা স্বীকার করেন, “আমি সোশাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখে বাড়িতে একটি বাজি বন্দুক তৈরি করার চেষ্টা করছিলাম। ওটা ফেটে যায়।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)