কংগ্রেসের ঝুলি শূন্য, মহাগটবন্ধনের উপমুখ্যমন্ত্রীর মুখ মাত্র ১৫ আসনে লড়া সাহানি, নেপথ্যে কোন সমীকরণ?
প্রতিদিন | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৬১ আসনে লড়ছে কংগ্রেস। ২০ আসনে লড়ছে সিপিআইএমএল(লিবারেশন)। সব মিলিয়ে বামেরা লড়ছে ৩০ আসনে। এঁদের কারও দলের নেতা উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষিত হলেন না। অথচ বিহারে মাত্র ১৫ আসনে লড়াই করা মুকেশ সাহানির নাম উপমুখ্যমন্ত্রী পদে ঘোষণা করে দিল মহাজোট। কিন্তু কেন? কেন এতটা গুরুত্ব দেওয়া হল মুকেশকে?
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার মহাগটবন্ধনের সাংবাদিক বৈঠকে তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করার কথা ছিল। কোনও উপমুখ্যমন্ত্রীর মুখ ঘোষণার কথা ছিল না। শেষ মুহূর্তে গোঁ ধরেন মুকেশ। তিনি সাফ বলে দেন, তেজস্বী যাদবকে যদি মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হয়, তাহলে তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। নাহলে ওই যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে তিনি যাবেন না। এদিকে সাংবাদিক সম্মেলনের সময় পেরিয়ে যায়। বেগতিক দেখে কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট প্রথমে আরজেডি নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জানতে চান, মুকেশকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করলে তাঁদের কোনও আপত্তি আছে কিনা। আরজেডি সম্মতি জানায়।
অশোক গেহলট এবার কথা বলেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে। কংগ্রেস হাই কম্যান্ডও জানিয়ে দেয়, মুকেশকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা যেতেই পারে, সেক্ষেত্রে অন্য কাউকেও উপমুখ্যমন্ত্রী করার বিকল্প রাখতে হবে। সিপিআইএমএল লিবারেশনও সেই প্রস্তাবে সম্মত হয়। আসলে মুকেশের ওই প্রস্তাবে রাজি না হলে তিনি শেষ মুহূর্তে জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। এই মুকেশ সাহানির বরাবরই আসনরফা নিয়ে দাবিদাওয়া বেশি। একটা সময় তাঁর দাবি ছিল, তাঁকে অন্তত ৫০ আসন ছাড়তে হবে। সেই সঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণা করতে হবে। পরে জোটের অন্য শরিকদের চাপে সেটা দাঁড়ায় অন্তত ২৪ আসনে। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেটাও তাঁকে ছাড়া হয়নি। মুকেশের দল ভিআইপির জন্য ছাড়া হয় মাত্র ১৫টি আসন। সেসময় মুকেশ মুখ বুজে মেনে নেন। কিন্তু তখনই ঠিক করে ফেলেছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রীর পদটি তিনি ছাড়বেন না।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুকেশের কিন্তু অতীতে শেষ মুহূর্তে পালটি খাওয়ার ইতিহাস আছে। ২০২০ সালেও শুরুতে মহাজোটের অংশ ছিল ভিআইপি। শেষে আসনরফা পছন্দ না হওয়ায় শেষ মুহূর্তে চলে যান এনডিএ-তে। এনডিএর অধীনে ১১ আসন লড়ে জেতেন ৪টিতে। ফলে শেষ মুহূর্তে তিনি যদি জোট ছেড়ে বেরিয়ে যান, তাহলে সমূহ ক্ষতি হতে পারে মহাজোটের। কারণ বিহারের জাতিগত সমীকরণ। মুকেশ নিজে মল্লা জাতির। মল্লা, সাহানি, নিষাদ ভোটারদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিহারে এই জনগোষ্ঠীর ভোট ৯ শতাংশ। এমনিতে বলা হয়, বিহারে আরজেডি-কংগ্রেসের হাতে মোটামুটি ৩০ শতাংশ ভোট রয়েছে। কিন্তু বিহার দখল করতে গেলে আরও একটি জনগোষ্ঠীর সমর্থন প্রয়োজন। সেজন্যই মুকেশ সাহানিকে এতটা গুরুত্ব দেওয়া।