• ফের চিটফান্ডের নামে ৪৫০ কোটির প্রতারণা আসানসোলে, অভিযুক্ত TMC সংখ্যালঘু নেতার বাড়ি ঘেরাও
    প্রতিদিন | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • শেখর চন্দ্র, আসানসোল: সারদা, রোজভ্যালির পর ফের রাজ্যে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি! বেশি লাভের নামে কয়েকশো কোটির প্রতারণার অভিযোগ। আসানসোলের এই ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য কমিটির সদস্যের পুত্রের দিকে। বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখালেন প্রতারিতরা। কম পুঁজির বিনিময়ে মোটা অঙ্কের সুদ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিনিয়োগকারী মোট ৪৫০ কোটি টাকা তছরূপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এনিয়ে আসানসোল উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রতারিতরা। তিনি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

    বৃহস্পতিবার আসানসোলের রেলপাড় এলাকার জাহাঙ্গির মহল্লায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি। জানা গিয়েছে, সাড়ে চারশো কোটি টাকা আর্থিক প্রতারণার ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় এত শোরগোল। অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য নেতা শাকিল আহমেদের পুত্র তহসিন আহমেদের বিরুদ্ধে। তিনি কম টাকা বিনিয়োগের বদলে বেশি লাভের ‘টোপ’ দিয়ে এলাকার বহু মানুষকে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ। প্রথমদিকে বিনিয়োগকারীরা বেশ খানিকটা লাভ পেলেও পরবর্তীতে হঠাৎই টাকা পাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বিনিয়োগকারীরা দুশ্চিন্তায় পড়েন। বাড়তে থাকে ক্ষোভ। টাকা ফেরতের দাবিতে তহসিন আহমেদের বাড়ির সামনে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ দেখান। বুধবার রাতে আসানসোল উত্তর থানায় দুটি অভিযোগ জমা পড়ে।

    বিনিয়োগকারীদের অন্যতম অবসরপ্রাপ্ত এক বিএসএফ অফিসার। তাঁর কথায়, “প্রথমে ৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। ভালো রিটার্ন পেয়ে আরও টাকা বিনিয়োগ করি। সবমিলিয়ে প্রায় ৪১ লক্ষ টাকা দিয়েছি। কিন্তু এখন আর কোনও টাকা বা সুদ পাচ্ছি না। অনেকেই আমার কথা শুনে এই প্রকল্পে টাকা দিয়েছিলেন। এখন সবারই টাকা আটকে গেছে। আমাদের ধারণা, প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে।” তাঁর দাবি, এই ঘটনায় মোট সাতজন জড়িত এবং প্রায় আড়াই হাজার বিনিয়োগকারী প্রতারিত হয়েছেন।

    একইভাবে মহিশীলা কলোনির বটতলা এলাকার বাসিন্দা মৌটুসি দত্ত নামে এক মহিলা জানান, “আমি বেকার। সোনার গয়না বন্ধক রেখে ২০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। কয়েকমাস সুদ পেয়েছিলাম, তারপর হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এখন টাকা চাইতে গেলে ধাক্কাধাক্কি করা হচ্ছে। আমি আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করি।”

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ও তদন্ত শুরু হয়েছে। তহসিন আহমেদ এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। আর্থিক প্রতারণার শিকার হওয়া বিনিয়োগকারীরা এখন তাদের কষ্টার্জিত অর্থ ফেরতের আশায় প্রশাসনের কাছে দ্বারস্থ হয়েছেন।
  • Link to this news (প্রতিদিন)