সুবীর দাস, কল্যাণী: আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এসআইআর, সিএএ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ক্রমশ চড়ছে উত্তাপ। তারই মাঝে সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের উদ্বোধন করা CAA শিবিরে ব্যাপক ভাঙচুর। অভিযোগ, কল্যাণী শহর মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি এবং তার অনুগামীরা ওই শিবিরে হামলা চালায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কল্যাণীতে ব্যাপক উত্তেজনা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার বঙ্গ বিজেপির অন্তঃসারশূন্য দশা আরও প্রকট হয়েছে বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলে।
কল্যাণী সেন্ট্রাল পার্কে বিজেপির প্রধান কার্যালয় শ্যামাপ্রসাদ ভবনের পিছনে অবস্থিত এই CAA কার্যালয়টি। অভিযোগ, বুধবার গভীর রাতে কল্যাণী শহর মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি তাপস ব্যাপারী ও তাঁর অনুগামীরা এই কার্যালয় ভাঙচুর করে। ভাঙা হয়েছে একটি মোটরবাইক, একাধিক চেয়ার-টেবিল। হামলায় কার্যালয়ের আরও বেশ কিছু সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও খবর। হামলার সময় CAA কার্যালয়ে থাকা এক বিজেপি নেতা জখম হয়েছেন বলেই খবর। এই ঘটনায় কল্যাণী শহর মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি-সহ তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে কল্যাণী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবে রাজনৈতিক মহলে জোর উত্তেজনা। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক তারকনাথ সরকার বলেন, “যারা ভাঙচুর করল তারা বিজেপি কর্মী। যাঁরা মার খেলেন তাঁরাও বিজেপি কর্মী। কোনও একটা কারণে হয়তো এই ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু খুবই দুঃখজনক। আমরা শীর্ষনেতৃত্বকে বারবার গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে বলেছি। দলের মধ্যে এমন অভ্যন্তরীণ গোলযোগ অনভিপ্রেত। রাজ্য নেতৃত্বর উচিত ব্যবস্থা নেওয়া।” তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটাই বিজেপির আসল চেহারা। ওরা মারামারি করছে, সঙ্গে সকলকে আতঙ্কিত করছে। এই ঘটনা প্রমাণ করছে, এই দলের কোনও নেতৃত্ব নেই। যে যেমন পারে তাই করছে।”
প্রসঙ্গত, আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ঠিক যেন ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচের মতো। গত কয়েকবার ভোটে তেমন আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, একে তো দক্ষ সংগঠকের অভাব এবং দলীয় অন্তর্কলহ – দু’য়ে মিলে গেরুয়া শিবিরের যাচ্ছেতাই পরিস্থিতি। ‘অন্তঃসারশূন্য’ বঙ্গ বিজেপির নেতা-কর্মীদের বিধানসভা নির্বাচনের আগে উজ্জীবিত করাই যেন বড় চ্যালেঞ্জ। তারই মাঝে কল্যাণীর এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে পদ্মশিবির।