• বিপর্যয়ে প্রায় ২০০ মেট্রিক টন নষ্ট হলেও দার্জিলিংয়ে কমছে না কমলার উৎপাদন
    বর্তমান | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: সমতলবাসীর জন্য সুখবর। পাহাড়ে বিপর্যয়ের ধাক্কায় প্রচুর বাগান ধ্বংস হলেও ফলন কমবে না কমলার। প্রশাসন সূত্রে খবর, বিপর্যয়ে ২০০ মেট্রিক টন উৎপাদন নষ্ট হলেও এবার কমলার ‘ফলন বর্ষ’। কাজেই গত বছরের মতোই এবার উৎপাদন হবে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনই প্রত্যাশা উদ্যানপালন দপ্তরের। ডিসেম্বর মাসেই সমতলে আসবে পাহাড়ে ‘রানি’। এদিকে, বিপর্যয়ে পাহাড়ে ফল, ফুল, সবজি চাষে প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। উদ্যানপালন দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে এমন রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে কৃষিদপ্তর। তারা ইতিমধ্যে রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। 

    দার্জিলিংয়ের কমলা লেবুর কদর জগৎজোড়া। চলতি মাসের ভয়াবহ বিপর্যয়ে পাহাড়ের একাংশে তছনছ হয়ে গিয়েছে কমলা বাগান। এরজেরে শীতের মরশুমে সমতলে পাহাড়ের ‘রানির’ দেখা মিলবে না বলেই অনেকের ধারণা তৈরি হয়েছিল। বিপর্যয় বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনের পর কমলার ফলন নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়েছে উদ্যানপালন দপ্তর। 

    জিটিএ’র ভূমি ও কৃষি বিভাগের সদস্য সতীশ পোখলের বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে কমলার বাগানের একাংশ ধ্বংস হয়েছে। তা হলেও টিকে থাকা বাগানে প্রচুর কমলা ধরেছে। এবার ফলন ভালো হবে বলেই উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিকরা আশা প্রকাশ করেছেন। 

    দার্জিলিং পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে কমলা বাগান। যারমধ্যে মিরিক উল্লেখযোগ্য। সংশ্লিষ্ট এলাকা ‘কমলা সিটি’ হিসেবে পরিচিত। বাইরে কার্শিয়াং, দার্জিলিং পুলবাজার, সুখিয়াপোখরি, রংলিরংলিয়টেও কমলার বাগান রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বিপর্যয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০০ মেট্রিক টন কমলার। যার অধিকাংশ অপরিণত অবস্থায় গাছ থেকে পড়ে গিয়েছে। আর কিছু জায়গায় বাগানের অস্তিত্ব নেই। বাগান ধসে খাদে চাপা পড়েছে। তা হলেও যেসব বাগান সুরক্ষিত রয়েছে, সেগুলিতে ব্যাপক ফলন ধরেছে। 

    দার্জিলিং জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর প্রভাস মণ্ডল বলেন, এবার কমলার ফলন বর্ষ। বিপর্যয়ের পরও টিকে থাকা বাগানে প্রচুর ফলন রয়েছে। সেগুলি এখন মাঝারি আকৃতির হয়েছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি সময় সেগুলি বাজারে আসবে বলেই মনে হচ্ছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কমলা চাষিদের নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তাঁদেরকে আগামীতে কমলা গাছের চারা কিংবা অন্য সবজি চাষের বীজ, সার বিনামূল্যে দিয়ে সহায়তা করা হবে। 

    প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বছর পাহাড়ে প্রায় ২ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে ছিল কমলা গাছ। তাতে ফলন হয়েছিল ১৯ হাজার ৫২১ মেট্রিক টন। জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর বলেন, এবারের ফলন গত বছরের মতো হবে বলে মনে হচ্ছে। আর কিছুদিন পর এ বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে। এদিকে, কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, বিপর্যয়ে কমলা, সবজি, আদা, এলাচ, ফুল প্রভৃতি মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি টাকা। ওই সব চাষিদের নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)