• অস্বাভাবিক দেরিতে চলল সরাইঘাট সহ ন’টি ট্রেন, অসমে আইইডি বিস্ফোরণ, নজরদারি বাড়ল রেল ট্র্যাকে
    বর্তমান | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের কোকরাঝাড় ও সালেকাঠি স্টেশনের মাঝে আপ লাইনে বিস্ফোরণে ট্রেন পরিষেবায় বেশ ভালোই প্রভাব পড়ল। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। বুধবার গভীর রাতের ওই ঘটনায় ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ও যাত্রী হয়রানি নিয়ে এনএফ রেলের তরফে বিস্তারিত কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম দেবেন্দ্র সিং বলেন, ফরেন্সিক সহ ওই বিস্ফোরণের ঘটনার সব ধরনের তদন্ত চলছে। তদন্তের পর স্পষ্ট হবে এর পিছনে কারা যুক্ত। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। 

    এনএফ রেলের সিপিআরও কপিঞ্জলকিশোর শর্মা বলেন, কিছু মালগাড়ি সহ ন’টি ট্রেন বিভিন্ন জায়গায় আটকে রাখা হয়। সাড়ে চার ঘণ্টার চেষ্টায় লাইন মেরামত করে ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। দ্রুততার সঙ্গে সব সামলে নেওয়া হয়েছে। কোনও ট্রেন বাতিল করতে হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ও রেলপথে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সিপিআরও’র বক্তব্য অনুযায়ী দ্রুততার সঙ্গে সামলে নেওয়া হলেও চার থেকে সাত ঘণ্টা বিলম্বিত হওয়ায় কিছু ট্রেনের যাত্রীদের চূড়ান্ত হয়রানির মধ্য পড়তে হয়। 

    রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে অসম থেকে এনজেপি হয়ে চলা বেশ কয়েকটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের তুলনায় দেরিতে চলেছে। হাওড়া-গুয়াহাটি সরাইঘাট এক্সপ্রেস তার নির্ধারিত সময়ের তুলনায় চার ঘণ্টারও বেশি দেরিতে গুয়াহাটি স্টেশনে পৌঁছয়। ফেরার পথে ট্রেনটি গুয়াহাটি থেকে হাওড়ার উদ্দেশ্যে নির্ধারিত সময়ের তুলনায় তিন ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। এর ফলে এনজেপি স্টেশনে দীর্ঘ সময় ট্রেনের অপেক্ষায় থেকে সমস্যায় পড়তে হয় বহু যাত্রীকে। 

    এছাড়াও ১৫৯০৯ অবোধ-অসম এক্সপ্রেস ট্রেনটি এদিন সকালে এনজেপি স্টেশনে ছ’ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছয়। ১৩১৭৪ শিয়ালদহ-কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে এনজেপি পৌঁছানোর কথা ছিল। সেটি বিকেল ৩টা ৪৭ মিনিটে আসে। আট ঘণ্টা দেরিতে চলায় স্টেশনে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা সমস্যায় পড়েন। সেরকম চরম দুর্ভোগে পড়েন ট্রেনে থাকা যাত্রীরাও। রাজেশ শইকিয়া তাঁর পরিবার নিয়ে অসম থেকে কলকাতা যাচ্ছেন এই ট্রেনে। তিনি বলেন, এত বিলম্বে ট্রেন চললে সকলের সমস্যা হয়। পানীয় জলের জন্য বেশি সমস্যা হয়েছে। 

    এদিকে, কোকরাঝাড়ে বিস্ফোরণের পর এনজেপি সহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলির নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।  আরপিএফের এক আধিকারিক বলেন, এনজেপি স্টেশনেও অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রেললাইনেও টহল বাড়ানো হয়েছে। সামনেই বিহারের নির্বাচন। তাই বিহারগামী ট্রেনগুলিতে আরপিএফের বিশেষ এসকর্ট টিম মোতায়েন করা হয়েছে। এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এনজেপি হয়ে বিহারের উদ্দেশ্যে মোট ১২টি ট্রেন গিয়েছে। সব ট্রেনেই বিশেষ এসকর্ট বাহিনী  ছিল। স্টেশনগুলিতে তল্লাশি চলছে। সন্দেহজনক ব্যক্তি নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

    রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ১টা নাগাদ আপ লাইন ধরে গুয়াহাটির দিকে যাচ্ছিল একটি মাল ট্রেন। ট্র্যাকে তীব্রতা টের পেয়ে মাল ট্রেনের চালক আপতকালীন ব্রেক কষে ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেন। চালক ট্রেন থেকে নেমে সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখেন ট্র্যাক বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছে। চালক ঘটনাটি ডিভিশনের শীর্ষ আধিকারিকদের জানান। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন ডিআরএম দেবেন্দ্র সিং। প্রাথমিক তদন্তে রেল কর্তাদের ধারণা, বিস্ফোরণে আইইডি ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। রেল জানিয়েছে, এটা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে নাশকতা।  এনজেপি স্টেশনে স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি রেল পুলিশের। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)