• কৃষ্ণনগর শহরে পুজোর শান্তিপূর্ণ ভাসান, বিচ্ছিন্ন ঘটনায় লাঠিচার্জ
    বর্তমান | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আগেই কৃষ্ণনগর শহরে কালীপুজোর প্রতিমা ভাসানপর্ব শেষ হয়েছে। বড় কোনও অশান্তি ছাড়াই নির্বিঘ্নে তা সম্পন্ন হয়েছে।‌ তবে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনার জেরে একাধিকবার পুলিশ লাঠিচার্জ করে। মনে করা হচ্ছে, অতি সক্রিয়তার জেরে এযাত্রায় পুলিশ উতরে গিয়েছে। নিরঞ্জন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে শোভাযাত্রার রুটকে ঢেলে সাজিয়েছিল প্রশাসন। গোটা রুটকে মোট ১২টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। প্রতি সেক্টরে একজন করে পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া‌ হয়। প্রতি সেক্টরে অফিসারের দায়িত্বে ছিল একটি করে ‘পুশিং পার্টি’। তারাই প্রতিটি সেক্টরে প্রতিমার শোভাযাত্রাকে গতিশীল করে। ফলে এবছর নিরঞ্জন প্রক্রিয়া বেশ কিছুটা তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। এই পদ্ধতি জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসানেও প্রয়োগ করা যাবে কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। 

    কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে নিরঞ্জন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোনও বড় অশান্তি হয়নি। আমরা এবার শোভাযাত্রার রুট অন্যভাবে সাজিয়েছিলাম। এতে ফল মিলেছে। আমরা এই নিয়ে ফিডব্যাক দেব। সেইসঙ্গে জগদ্ধাত্রী পুজো নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি চলছে।

    উল্লেখ্য, কৃষ্ণনগর শহরে কালীপুজোর ভাসান সচরাচর শেষ হতে সন্ধ্যা থেকে পরের দিন বেলা গড়িয়ে যায়। গত বছর কালীপুজোর প্রতিমা নিরঞ্জন প্রক্রিয়া শেষ হতে প্রায় সকাল ১০টা বেজে গিয়েছিল। এবছর বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কৃষ্ণনগর শহরের প্রায় ১০০টি পুজো কমিটি প্রতিমা নিরঞ্জন করে। যার মধ্যে ৪২টি সাঙের প্রতিমা ছিল। এবছর নিরঞ্জন প্রক্রিয়া চলেছে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত। যদিও পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, একটি পুজো কমিটি সাঙের প্রতিমা করেছিল। কিন্তু তাদের বেয়ারা না আসায় সমস্যায় পড়ে। তখন অপর পুজো কমিটির বেয়ারা আনিয়ে প্রতিমা নিয়ে বের হয়। কিন্তু সেই সমস্ত বেয়ারা তখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। ফলে তাঁরা প্রতিমা কাঁধে করে নিয়ে যেতে পারছিলেন না। তবে, শেষ পর্যন্ত তাঁরাই ধুঁকতে ধুঁকতে কদমতলা ঘাটে গিয়ে পৌঁছন।

    পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এবছর লরির প্রতিমা নিরঞ্জন শেষ হতেই প্রায় রাত ১২টা বেজে যায়। তারপর সাঙের প্রতিমার ভাসান শুরু হয়। যার ফলে নিরঞ্জন প্রক্রিয়া শেষ হতে দেরি হয়।

    তবে, প্রতিমা নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা সুশৃঙ্খল করতে পুলিশ একাধিকবার লাঠিচার্জ করে। রাজবাড়িতে চকেরপাড়ার একটি পুজো কমিটির উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। কারণ, ওই পুজো কমিটির প্রতিমাকে পুলিশ দাঁড়াতে বলেছিল। কিন্তু পুজো কমিটির বেশ কয়েকজন জোর করে ভিড়ের মধ্যে প্রতিমা নিয়ে যেতে চায়। যার ফলে সাঙের মাঝেই একটি বাচ্চা চলে আসে। ধাক্কাধাক্কিতে সেও জখম হয়। তখন পুলিশ লাঠিচার্জ করে‌। আবার কদমতলা ঘাটে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে একটি পুজো কমিটির লোকজন আতসবাজি ফাটায়। পুলিশের নিষেধ তারা শোনেনি। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সেইসঙ্গে সেক্টরভিত্তিক একাধিক পুশিং পার্টি থাকার কারণেও ভাসান প্রক্রিয়া সুশৃঙ্খলভাবে করা গিয়েছে।  কৃষ্ণনগরে ভাসানে ঢাকী। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)