সংবাদদাতা, মানকর: দীর্ঘদিন ধরে বেহাল মানকর উত্তর ক্যানেলপাড় এলাকার রাস্তা। প্রশাসনকে বহুবার জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। তাই বাসিন্দারা নিজেরাই রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী হলেন। মঙ্গল ও বুধবার ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে হাজির হন গৃহবধূরাও। তাঁদের অভিযোগ, বেহাল রাস্তায় হাঁটাচলা করা দায় হয়ে উঠেছে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বারবার পঞ্চায়েতে আবেদন করেও কোনও সুরাহা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে মানকর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ডালিয়া লাহাকে ফোন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
মানকর উত্তর ক্যানেলপাড় এলাকার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল হয়ে রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এর আগেও নিজেরা টাকা তুলে রাস্তা মেরামত করেছিলেন। কিন্তু, ফের রাস্তা বেহাল হয়ে গিয়েছে। রাস্তায় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। হেঁটে যাওয়া দায় হয়ে গিয়েছে। অবশেষে হাল ফেরাতে নিজেরাই ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে এদিন রাস্তা সংস্কারে নামেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তা সারাইয়ের কাজে নেমেছি। সাত বছর আগে আমাদের বলা হয়েছিল এই রাস্তা পঞ্চায়েত থেকে করা হবে। কিন্তু, বারবার আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি। অথচ এই রাস্তা দিয়ে খাণ্ডারিডাঙা, মানকর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া যায়। চাষের প্রয়োজনে ট্রাক্টর যাতায়াত করায় রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। বর্তমানে এই রাস্তা দিয়ে ট্রাক্টর কিংবা গোরুর গাড়িও যেতে পারবে না। ফলে মাঠের ধান ঘরে তুলতে চাষিরা সমস্যায় পড়বেন।
এক গৃহবধূ বলেন, বৃষ্টি হলে আর রাস্তায় যাওয়া যায় না। ঢালাই না করা হলেও অন্তত রাবিশ ফেলে যাতায়াতের উপযোগী করার আবেদন করেছিলাম। তখন বলা হয়েছিল এই রাস্তা ঢালাই করা হবে। কিছুদিন পরে আবার বলা হল টাকা নেই। ওই রাস্তার কাজ বন্ধ থাকবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মানকর থেকে ভাতকুণ্ডা যাওয়ার রাস্তায় ক্যানেলের সেতুর উপর সম্প্রতি হাইট বার বসানো হয়েছে। ফলে সমস্যায় পড়েছে আউশগ্রাম-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। সেতুটি দুর্বল বলে বোর্ড বসিয়ে হাইট বার লাগানো হয়েছে। পাশে যে সেতু তৈরি করা হয়েছে, নিচু হওয়ায় গাড়ি যাতায়াত করে না বললেই চলে। ফলে এই বেহাল রাস্তা দিয়েই অনেকে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। উত্তর ক্যানেল পাড়ের এই রাস্তা দিয়ে এসে মানকরে ঢোকা যায়। ফলে বেহাল রাস্তাতেই ঝুঁকি নিয়ে অনেকে আসছেন।
স্থানীয় কংগ্রেস নেতা জয়গোপাল দে বলেন, শুধু মুখে উন্নয়ন হচ্ছে। মানুষ ন্যূনতম পরিষেবা পাচ্ছেন না। সিপিএম নেতা সমীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, পরিকল্পনাবিহীন প্রশাসন চলছে। মানুষের দুর্ভোগের দিকে নজর নেই। তবে গলসি-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ব্লকজুড়ে রাস্তার কাজ চলছে। আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচি মানকরে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সেখানে রাস্তার বেহাল দশার কথা তুলে ধরলে নিশ্চয়ই সুরাহা হবে। রাজ্য সরকার উন্নয়নের পক্ষেই।-নিজস্ব চিত্র