কাটোয়া হাসপাতালে এইচডিইউ ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা বাড়েনি, অসন্তোষ রোগীর পরিজনদের
বর্তমান | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, কাটোয়া: মুমূর্ষু রোগীদের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে চালু হয়েছিল হাই ডিপেনডেন্সি ওয়ার্ড। সব সময়ে চিকিৎসক থেকে নার্সের সহায়তা পাওয়া যায় এইচডিইউতে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে মাত্র ছ’টি বেডেই চলছে এইচডিউ এর পরিষেবা। বেড বাড়ানোর কথা থাকলেও তা এখনও বাড়েনি। ইউনিটে জায়গা না পাওয়া মুমূর্ষু রোগীদের ‘রেফার’ হওয়াই ভবিতব্য। বাড়ছে শ্বাসকষ্টের রোগী। ক্ষুব্ধ হচ্ছেন রোগীর পরিজনরা। তাঁদের দাবি, এইচডিইউতে পর্যাপ্ত বেড না থাকায় বর্ধমানে ছুটতে হচ্ছে। বেড বাড়লে আরও রোগী ভর্তি হতে পারত।
কাটোয়ার বিধায়ক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এইচডিইউ বেড বাড়ানো নিয়ে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি জানিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। আশাকরি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে এইচডিইউ ইউনিট চালু হয়। দিবারাত্র চিকিৎসক পরিষেবা, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ও ভেন্টিলেশনের সুবিধা মেলে ওই ইউনিটে। মুমূর্ষু রোগীদের ওই ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু এই ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা মাত্র ৬টি। কয়েক বছর আগে ওই ওয়ার্ডের শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ২৪টি করার কথা ছিল। প্রথম পর্যায়ে ১২টি বাড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু এখনও তা হল না। বেড বাড়ানোর জন্য পূর্তদপ্তর প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করে দিয়েছে। এমনিতেই ৫৪ জন চিকিৎসক রয়েছেন। তাও এইচডিইউ পরিষেবা বাড়ানো হয়নি। এ নিয়ে রোগীর পরিজনরা ক্ষুব্ধ। তাঁদের দাবি, হার্ট অ্যাটাক বাড়ছে, তাছাড়া দুর্ঘটনাগ্রস্ত অনেকেরই এইচডিইউর পরিষেবা পেতে কাটোয়ায় আসছেন। কিন্তু রাদের অনেককেই হতাশ হতে হচ্ছে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার বিপ্লব মণ্ডল বলেন, এইচডিইউতে ছ’টি বেড ভর্তি হয়ে গেলে আমাদেরও খারাপ লাগে। অন্য রোগীদের তখন রেফার করে দেওয়া ছাড়া গতি থাকে না। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাছাড়া রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকেও জানিয়েছি৷
শুধু তাই নয়, মাইক্রো সার্জারি ও অর্থোপেডিকের অত্যাধুনিক যন্ত্র আনারও পরিকল্পনা আছে। সেটা হলে এবার থেকেই কাটোয়া হাসপাতালেই মাইক্রো সার্জারি করা যাবে।
এই মুহূর্তে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে প্রসূতি, পুরুষ, মহিলা, শিশু সহ মোট ২৮৬টি শয্যার অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের ভিতরে জায়গা অপরিসর থাকায় ২৫৬টি শয্যা রয়েছে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের উপর পূর্ব বর্ধমান, নদীয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি জেলার একাংশ নির্ভরশীল। হাসপাতালে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড পাওয়া নিয়ে সমস্যা তৈরি হয় রোগীদের। হিমশিম খেতে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এবার এইচডিইউ ইউনিটের শয্যা বাড়লে অনেক রোগী সেখানে পরিষেবা পাবেন। রেফারের হার আরও কমবে বলে আশা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। -নিজস্ব চিত্র