• পুড়ে ছাই আমহার্স্ট স্ট্রিটের প্রিন্টিং প্রেস, চক্রান্তের অভিযোগ তুললেন স্থানীয়রা
    বর্তমান | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বৃহস্পতিবার সাতসকালে খাস কলকাতায় ঘটল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। এদিন সকাল ৮টা নাগাদ আমহার্স্ট স্ট্রিটে একটি প্রিন্টিং প্রেসে আগুন লাগে। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে দমকলের চারটি ইঞ্জিন। যদিও প্রচুর পরিমাণে কাগজ ও দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় গোটা দোকানই ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ওই দোতলা বাড়ির সামনে থাকা মুদি দোকান ও দু’টি মোটরবাইক পুড়ে গিয়েছে। 

    স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে ১০৬এ, রাজা রামমোহন রায় সরণির (আমহার্স্ট স্ট্রিট) একটি দোতলা বাড়ির একতলার প্রিন্টিং প্রেস থেকে কালো ধোঁয়া বেরতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। কিছুক্ষণের মধ্যে ধোঁয়ায় গোটা এলাকা ঢেকে যায়। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে তাঁরাই আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। খবর দেওয়া হয় দমকল এবং পুলিশে। কিছুক্ষণের মধ্যে এক এক করে দমকলের চারটি ইঞ্জিন চলে আসে। এলাকা ঘিঞ্জি হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় দমকলকে। অগ্নিকাণ্ডের সময় প্রিন্টিং প্রেস বন্ধ ছিল। তবে সেখানে প্রচুর পরিমাণে দাহ্য পদার্থ মজুত আছে বলে জানতে পারেন কর্তব্যরত দমকলকর্মীরা। তাই আগুন যাতে কোনওভাবে ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করাই ছিল তাঁদের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সমস্ত সতর্কতা নেওয়া নেয়। জানা গিয়েছে, ভিতরের মবিলের ড্রাম থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। গ্যাস ও ধোঁয়া এতটাই ছিল যে মাস্ক পরেও ভিতরে ঢুকতে সমস্যায় পড়েন দমকলকর্মীরা। পরে ল্যাডার থেকে জল দিয়ে আগুন অনেকটা আয়ত্তে আনা সম্ভব হয়। তারপর দোকানের ভিতরে ঢোকে দমকল। সাকশন মেশিন দিয়ে ধোঁয়া বের করা হয়। সব মিলিয়ে বেশ বেগ পেতে হয় দমকলকর্মীদের। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। 

    কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও জানা যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও এখনও নির্দিষ্ট নয়। তবে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। এলাকার বাসিন্দা তথা ক্ষতিগ্রস্ত এক দোকানদার বলেন, ‘কীভাব আগুন লাগল, বোঝা যাচ্ছে না। শর্ট সার্কিট হয়ে থাকলে সেটা কীভাবে হল, তাও স্পষ্ট নয়। অনেকদিন ধরেই এখানে নতুন বিল্ডিং বানানোর চেষ্টা চলছে।’ স্থানীয় ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা বরো চেয়ারম্যান সাধনা বোস বলেন, ‘ওই বাড়ি ভেঙে বহুতল বানানোর চেষ্টা চলছে। ওখানকার বাসিন্দারা আমার কাছে এসেছিলেন। অভিযোগ ছিল, প্রোমোটার ওদের ঘর না দেওয়ার চক্রান্ত করছে। কিন্তু আমি বলেছি, নতুন বিল্ডিং হলে ওদেরও ঘর দিতে হবে। কীভাবে আগুন লাগল, তা পুলিশ ও দমকল তদন্ত করে দেখছে।’ ওই বিল্ডিংয়ের সামনে ফুটপাতে যেভাবে একের পর এক দোকান বা স্টল বসানো হয়েছে, সেখানে যেভাবে ইলেকট্রিকের তার টেনে বিপজ্জনকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে যে কোনও সময় এমন ঘটনা ঘটতে পারত বলেই দাবি স্থানীয়দের। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)