আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি 'রিল' তৈরী করা ঘিরে একের পর এক দুর্ঘটনা। সোশ্যাল মিডিয়ার ‘রিল’ বানানোর নেশা যে কী ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে, ওড়িশার দু’টি সাম্প্রতিক ঘটনাই তার প্রমাণ। পুরীতে রেললাইনের ধারে রিল বানাতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মর্মান্তিক মৃত্যু হল এক কিশোরের। অন্য দিকে, কোরাপুটে জলপ্রপাতে ভিডিও শ্যুট করতে গিয়ে হড়পা বানে ভেসে গেলেন এক ইউটিউবার।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার পুরীর জনকদেবপুর রেল স্টেশনের কাছে। মৃত কিশোরের নাম বিশ্বজিৎ সাহু (১৫)। সে মঙ্গলাঘাট এলাকার বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, বিশ্বজিৎ এ দিন মায়ের সঙ্গে দক্ষিণাকালী মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিল।
বাড়ি ফেরার পথে সে হঠাৎই রেললাইনের ধারে দাঁড়িয়ে পড়ে। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য একটি ছোট ভিডিও বা ‘রিল’ বানাতে শুরু করে সে। সেই সময় উল্টো দিক থেকে একটি ট্রেন আসছিল। মোবাইলে উদ্ধার হওয়া ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ট্রেনটি এগিয়ে এলেও বিশ্বজিৎ নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করতে ব্যস্ত ছিল। এরপর ট্রেনের তীব্র হাওয়ার ঝাপটাতেই তার হাত থেকে মোবাইলটি ছিটকে মাটিতে পড়ে যায়। সে নিজেও ট্রেনের ধাক্কায় মারাত্মক ভাবে জখম হয়।
খবর পেয়ে ওড়িশা রেল পুলিশ (জিআরপি) ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তারা বিশ্বজিতের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। অন্য দিকে, গত আগস্ট মাসেও রিল বানানোর আসক্তি কেড়ে নিয়েছিল আর এক তরুণের প্রাণ। গঞ্জাম জেলার বেরহামপুরের বাসিন্দা, ২২ বছরের ইউটিউবার সাগর টুডু কোরাপুট জেলার দুদুমা জলপ্রপাতে ভিডিও বানাতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান।
জানা গিয়েছে, সাগর তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ড্রোন ক্যামেরা নিয়ে ভিডিও রেকর্ড করছিলেন। খবর অনুযায়ী, স্থানীয় পর্যটনস্থলগুলির ভিডিও রেকর্ড করতে বন্ধু অভিজিৎ বেহেরার সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন। সেই সময় লামতাপুর এলাকায় ভারী বৃষ্টির কারণে মছকুন্দ বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়। এর ফলে জলপ্রপাতে হঠাৎই জলের স্রোত ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়ে যায় (হড়পা বান আসে)।
সাগর সেই মুহূর্তে একটি পাথরের উপর দাঁড়িয়েছিলেন। প্রবল জলের তোড়ে তিনি ভারসাম্য রাখতে না পেরে ভেসে যান। উপস্থিত পর্যটক এবং স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে মছকুন্দ পুলিশ এবং দমকল বাহিনী দীর্ঘ তল্লাশি চালালেও সাগরের কোনও খোঁজ পায়নি। এই দুই ঘটনায় গোটা ওড়িশায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।