• ভাই-দুজের দিনই আশা ভঙ্গ লালডি বহেনা'দের! কথার খেলাপ মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর, মিলল না উৎসব বোনাস...
    আজকাল | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত জুলাই মাসেই মধ্যপ্রদেশে মহিলাদের অনুদান বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। ঘোষণা করেছিলেন যে, দীপাবলির পর নভেম্বর মাস থেকে রাজ্যের মহিলাদের অনুদান মাসে ১,২৫০ টাকা বেড়ে হবে ১,৫০০ টাকা। এখানেই না থেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, ভাই দুজ উপলক্ষে উপহার নভেম্বরে নয়, অক্টোবরের বিশেষ দিনের আগেই বাড়তি ২৫০ টাকা লাডলি বহেনাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে। 

    কিন্তু, সেই ঘোষণাই সার, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনও টাকাই লাডলি বহেনাদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি! হতাশ বাজার হাজার বোনেরা এরপর ভোপালে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে জড়ো হয়েছিলেন। ভেবেছিলেন উৎসবের উপহার স্থানান্তর হবে। তবে, টাকা মেলেনি, শেষপর্যন্ত আশ্বাসেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাঁদের। 

    উল্লেখ্য, বর্তমানে 'লাডলি বহেনা যোজনা'-র অধীনে মধ্যপ্রদেশে এখন প্রতি মাসে এক কোটি ১.২৬ কোটি মহিলা এই অনুদান সুবিধা পান। এই অনুদান বৃদ্ধির সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব বলেছিলেন, "নভেম্বর থেকে, মধ্যপ্রদেশের প্রতিটি বোন প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা পাবে। ২৫০ টাকা বৃদ্ধি কেবল একটি পরিমাণ নয়। এটি নতুন সাহস এবং আশার প্রতীক।" 

    কেন লাডলি বহেনাদের অ্যাকাউন্টে প্রতিশ্রুতি মতো ভাই দুজের উপহার উৎসবের আগে জমা পড়ল না। সরকারি সূত্রে খবর, বাজেটের সীমাবদ্ধতা এবং অর্থ বিভাগের বিলম্বিত অনুমোদনের কারণে ২৫০ টাকা সঠিক সময়ে স্থানান্তর সম্ভব হয়নি।

    মদ্যপ্রদেশের সরকারি আমলারা জানিয়েছেন যে, সরকার প্রাথমিকভাবে ১৫ অক্টোবরের আগে একবারে ১,৫০০ টাকা জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু অর্থের ক্লিয়ারেন্স দু'বার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল, প্রথমে দীপাবলির জন্য এবং পরে ভাই দুজের জন্য।

    আমলারা ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করেছেন যে, অর্থ বিভাগের বিলম্বিত অনুমোদন এবং বাজেটের চাপের কারণে এই অনুদান স্থগিত করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনে 'লাডলি বহনা' প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে সরকার এখন পর্যন্ত ২৯টি কিস্তিতে ৪৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি স্থানান্তর করেছে।

    প্রতি মাসে ১,২৫০ টাকা থেকে ১,৫০০ টাকা বৃদ্ধির ফলে ১.২৬ কোটি মহিলা উপকৃত হবেন এবং প্রতি মাসে রাজ্যের ৩০০ কোটি টাকারও বেশি দান-খয়রাতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    বিলম্ব সত্ত্বেও, মুখ্যমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানটি প্রকল্পের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক তাৎপর্য তুলে ধরার জন্য ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেন, "পৃথিবীর কোনও সভ্যতা নারীদের সনাতন ধর্মের মতো এত উচ্চ স্থান দেয়নি। ভাই দুজ বোনের আশীর্বাদ এবং ভাইয়ের কর্তব্য পালনের উদযাপন। মধ্যপ্রদেশ এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখছে এবং একই সঙ্গে মহিলাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতা দিচ্ছে।" 

    মুখ্যমন্ত্রী পূর্ববর্তী কিস্তিতে ছোট ব্যবসা শুরু করার জন্য মহিলাদের প্রশংসা করেছেন - সেলাই মেশিন কেনা, ফটোকপি সেটআপ করা বা দুগ্ধ খামার শুরু করা - আর্থিক সহায়তাকে জীবিকা নির্বাহে রূপান্তরিত করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

    সংশোধিত পরিকল্পনার অধীনে, যোগ্য মহিলারা নভেম্বর থেকে প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা পাবেন, যা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জোর দিয়ে দাবি করেছেন যে, রাজ্যের লক্ষ্য কেবল কল্যাণ নয় বরং মহিলাদের স্বনির্ভরতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক রূপান্তর। তিনি বলেছেন, "আমাদের বোনেরা কেবল সুবিধাভোগী নন, তাঁরা পরিবার ও সমাজের মেরুদণ্ড। নতুন আর্থিক কিস্তি তাদের আত্মবিশ্বাসকে শক্তিশালী করবে এবং পরিবারের আয় উন্নত করবে।"

    বিজেপি তাদের নির্বাচনী ইস্তেহারে এই প্রকল্পের সুবিধা প্রতি মাসে বাড়িয়ে ৩,০০০ টাকা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু, প্রথম প্রতিশ্রুতিতেই পা পিছলেছে মোহন যাদব সরকারের! ফলে ৩,০০০ হাজার টাকার প্রস্তাব ও প্রতিশ্রুতির বিষয়টি এখন বোনেদের কাছে যেন সোনার পাথর-বাটির মতই মনে হচ্ছে। 
  • Link to this news (আজকাল)