বাজি ফাটানো নিয়ে মহিলা ও শিশুকে মারধরের অভিযোগ, বদল করা হল কোচবিহারের পুলিশ সুপারকে ...
আজকাল | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
মনিরুল হক, কোচবিহার: দীপাবলির রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অবশেষে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য প্রশাসন। বাজি ফাটানোর জেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মারধরের অভিযোগ ওঠার পর বদলি করে দেওয়া হল কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যকে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন সন্দীপ কাররা।
ঘটনাটি ঘটে দীপাবলির রাতে প্রায় সাড়ে বারোটার সময়। অভিযোগ, পুলিশ সুপারের সরকারি বাংলোর পাশের এলাকায় কিছু শিশু ও মহিলা বাজি ফাটাচ্ছিলেন। সেই সময় হঠাৎই হাফ প্যান্ট, স্যান্ডো গেঞ্জি ও মাথায় কাপড়ের ফেট্টি পরে হাতে লাঠি নিয়ে হাজির হন পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। এরপর স্থানীয় কয়েকজন মহিলা ও শিশুকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ঘটনার সময় আরও কয়েকজন পুলিশকর্মীও উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁরাও আক্রান্তদের মারধর করেন।
এই ঘটনার পর থেকেই কোচবিহার জুড়ে শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ। বিরোধী দল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে আন্দোলনে নামে এবং পুলিশের ভূমিকার তদন্ত দাবি করে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পথ অবরোধ ও প্রতিবাদ মিছিল হয়। পুলিশ সুপারের বাংলোর সামনেও উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় অতিরিক্ত বাহিনী। বিক্ষোভকারীরা আইন ভঙ্গ করেছেন সেই অভিযোগে মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে আইনজীবী মল্লিকা কার্জি-সহ তিনজন মহিলা জামিন পেলেও, বাকি পাঁচজনকে দু'দিনের পুলিশ হেফাজত ও তিনজনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সন্ধে থেকেই একটানা বাজি ফাটানো হচ্ছিল। এমনকী আমার বাংলোর ভেতরেও বাজি ছুড়ে মারা হচ্ছিল। নিরাপত্তারক্ষীরা বার বার বারণ করলেও কেউ তা মানেনি। আমি শুধুমাত্র পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছিলাম।”
তবে তাঁর ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় সাধারণ মানুষ ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হন অনেকে। অবশেষে সরকারের নির্দেশে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল কোচবিহার থেকে।
নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সন্দীপ কাররা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি দ্রুত কোচবিহারে এসে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তবে মারধরের অভিযোগ ঘিরে তদন্তের দাবি এখনও অব্যাহত।