মহিলা চিকিৎসককে হেনস্তার প্রতিবাদ, উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ৫ ঘণ্টার ‘পেন ডাউন’ জুনিয়র ডাক্তারদের
প্রতিদিন | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: হাসপাতালের মধ্য়ে জুনিয়র মহিলা চিকিৎসককে মারধর ও ধর্ষণের হুমকি। ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচি নিয়েছেন উলুবেড়িয়া হাসপাতালের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে কর্মসূচি। দুপুর ২টো পর্যন্ত তা চলবে। পাঁচ ঘণ্টার এই পেন ডাউন কর্মসূচিতে তাঁরা এমারজেন্সি থেকে আউটডোর কোথাও ডিউটি করবেন না বলে জানিয়েছিলেন। তবে এমারজেন্সিতে তাঁরা সহযোগিতা করেছেন। হাসপাতালে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে সিনিয়র ডাক্তারা কাজ করছেন। জরুরি ভিত্তিতে সিনিয়র ডাক্তারদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ৭০ থেকে ৮০ জন জুনিয়ার ও সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক রয়েছেন। নিগ্রহের প্রতিবাদে তাঁরা ১১ দফা দাবি জানিয়ে শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে এই ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচি নিয়েছেন। তাঁদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানো পাশাপাশি অভিযুক্ত অস্থায়ী হোম গার্ডকে পুরোপুরি তাঁর চাকরি থেকে বরখাস্ত করা। এছাড়া দাবি রয়েছে, হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশকর্মী বাড়ানো, প্যানিক বোতাম লাগানো, ওয়ার্ডে ঢোকার মুখে যেখানে লিফট রয়েছে সেগুলো সব সময় বন্ধ রাখা। রোগীর সঙ্গে মাত্র একজন করে আত্মীয়দের ঢোকার অনুমতি দেওয়া, কর্মীদের সচিত্র পরিচয়পত্র তৈরি-সহ একাধিক দাবি তুলে সরব হয়েছেন তাঁরা। এই দাবিগুলির মধ্যে ইতিমধ্যেই কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত মেডিক্যাল সুপার অ্যান্ড ভাইস প্রিন্সিপাল সুবীর মজুমদার জানিয়েছেন, “পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট। নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জুনিয়রদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া হয়েছে। তাহলে কেন পেন ডাউন কর্মসূচি? জানা গিয়েছে, জুনিয়র চিকিৎসকদের উপরমহল থেকে চাপের কারণে তাঁরা এই কর্মসূচি করছেন।
এই কর্মসূচি নিয়ে রোগী ও পরিবারের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তাঁদের একাংশ জানাচ্ছেন, আউটডোরে চিকিৎসক কম রয়েছে, লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে অনেকক্ষণ। তবে চিকিৎসক দেখেছে। খুব একটা সমস্যা হয়নি। অন্য অংশ জানাচ্ছেন, এই কর্মসূচি না করলেই ভালো হত। এক সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক পার্থ মণ্ডল বলেন, “আমাদের পেন ডাউন শুধুমাত্র বহির্বিভাগের জন্য। এমনটা নয়, এমারজেন্সিতে দরকার হলে আমরা যাচ্ছি না। আমরাও চাই না রোগীদের অসুবিধা হোক। যে সিকিউরিটি গলদ ধরা পড়েছে তার প্রেক্ষিতে এই প্রতীকী পেন ডাউন কর্মসূচি। এই কর্মসূচি প্রতিদিন চালিয়ে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা আমাদের নেই।”
এদিকে আজ, শুক্রবার এই মামলায় অভিযুক্ত ট্রাফিক হোমগার্ড-সহ তিনজনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হবে। তাঁদের ফের আদালতে পেশ করবে পুলিশ। মহিলা চিকিৎসককে নিগ্রহের অভিযোগ ট্রাফিকের হোম গার্ড-সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অস্থায়ী হোমগার্ড শেখ বাবুলালকেও সাসপেন্ডও করা হয়েছে।