হাতে লেখা এফডি সার্টিফিকেট! ফরাক্কার সরকারি ব্যাঙ্কে অভিনব ‘প্রতারণা’, কোটি টাকা হাতিয়ে গ্রেপ্তার ২
প্রতিদিন | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: গ্রাহকদের প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েও শেষ রক্ষা হল না। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল ব্যাঙ্কের দুই কর্মী। বৃহস্পতিবার রাতে ফরাক্কা থানার পুলিশ পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ফরাক্কা ব্যারেজ শাখার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী প্রবীণ দও ও ক্যাশিয়ার শুভেন্দু সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের শুক্রবার দুপুরে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে পাঠায় পুলিশ।
ধৃত ব্যাঙ্কের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী প্রবীণ দও ফরাক্কা ব্লকের বেওয়া ? ১ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের পলাশির বাসিন্দা ছিলেন। যদিও তিনি ফরাক্কা ব্যারেজ আবাসনে থাকতেন। ২০১২ সাল থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ফরাক্কা ব্যারেজ শাখায় সাফাই কর্মী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ব্যাঙ্কের কর্মীর অভাব থাকায় তাঁকে সাফাই কর্মীর পাশাপাশি পাশবুক আপডেটের কাজ করতে হত।অপরদিকে ধৃত ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার শুভেন্দু সাহার বাড়িও ফরাক্কা ব্লকের পলাশি। ব্যাঙ্কের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী প্রবীণ দত্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা তছরুপ।
গ্রাহকদের কাছ থেকে ২৮ লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার জন্য নিয়েছিলেন। তা অ্যাকাউন্টে জমা না করে সম্পূর্ণ আত্মসাৎ করা সহ ভুয়ো ফিক্সড ডিপোজিট সার্টিফিকেট হাতে লিখে ৬৪ লক্ষ টাকা গ্রাহকদের সম্পূর্ণ তছরুপের। স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ নিয়ে গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন প্রবীণ দত্ত। দুর্গাপুজোর ছুটির পর ব্যাঙ্ক খুলতেই বিষয়টি জানাজানি হতেই গ্রাহকরা ব্যাঙ্কে বিক্ষোভ দেখায়। প্রবীণ দত্ত ঘটনার পর আত্মগোপন করেন। গ্রাহকদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অরিন্দম মিত্র ফরাক্কা থানায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী প্রবীণ দত্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেন।
ঘটনার তদন্তে নেমে ফরাক্কা থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নিউ ফরাক্কা বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রবীণ দত্তকে গ্রেপ্তার করে। এই প্রতারণা কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এদিন রাতেই ফরাক্কার পলাশির বাড়ি থেকে ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার শুভেন্দু সাহাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এপ্রসঙ্গে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অরিন্দম মিত্র জানান, “ব্যাঙ্কের টাকা তছরুপ হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত ৫০ জন গ্রাহকদের লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়েছি। এবিষয়ে ফরাক্কা থানায় লিখিত এফআইআর করা হয়েছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে শুনেছি। বিষয়টি আদালতে মামলা চলছে। আশা করি দ্রুত এঘটনার বিচারপর্ব শেষ হোক। গরিব মানুষ যাতে তাড়াতাড়ি তাদের টাকা ফেরত পান। বিভাগীয় তদন্তও চলছে। আাশা করি শীঘ্রই এই ঘটনার সত্যতা প্রকাশ্যে চলে আসবে।”