• দিঘির জলে দূষণ রুখতে প্রশাসনের উদ্যোগ বাগদায়
    আনন্দবাজার | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • দিঘির জলে দূষণ রোধে এ বার কালীপুজো পরবর্তী প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। বাগদা ব্লকের ৪ নম্বর দিঘিরপাড় এলাকায় থাকা দিঘিতে শুক্রবার ১৪টি কালী প্রতিমা বিসর্জন হবে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, দিঘির জলে যাতে রং, মাটি ও কাঠামোর আবর্জনা মিশে জল দূষিত না করে, সে জন্যই মূলত এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

    বাগদা থানার সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলবে বিসর্জন। পুজো উদ্যোক্তারা প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা করে দিঘির ঘাটে পৌঁছবেন। সেখানে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও পুলিশ-প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত থাকবেন। স্বেচ্ছাসেবক ও কর্মীরা প্রতিমা জলে নামানোর কাজ করবেন।

    পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সকাল থেকেই দিঘির জলে থাকা কাঠামো ও উপকরণ তুলে ফেলার কাজ শুরু হবে। কারণ, স্থানীয় বাসিন্দারা দিঘির জল স্নান, গৃহস্থালির কাজ এবং মাছ চাষে ব্যবহার করেন। তাঁদের আশঙ্কা, প্রতিমার রং ও মাটির উপাদান জলে মিশে গেলে জলের মান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মাছচাষও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

    গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, প্রতিমা বিসর্জনের দিনই যদি কাঠামো জল থেকে তুলে ফেলা হয়, তা হলে দূষণ অনেকটাই রোধ করা সম্ভব। এক দিন বা তার বেশি সময় পরে তুললে প্রতিমার রং ও রাসায়নিক উপাদান পুরোপুরি জলে মিশে যায়, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

    এ বছর বাগদা থানা এলাকায় ৩৬০টি কালীপুজো হয়েছে। এর মধ্যে দিঘিরপাড় এলাকার বাইরে অন্যান্য প্রতিমাগুলি কোদালিয়া নদী, বেতনা নদী, ইছামতী নদী, এবং বিভিন্ন খাল, বিল ও পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হবে।

    তবে দিঘির মতো অন্য জায়গাগুলিতে বিসর্জনের পরে কাঠামো তোলার কোনও নির্দিষ্ট ব্যবস্থা এখনও কার্যকর হয়নি।

    স্থানীয় প্রতিমা শিল্পীরা জানিয়েছেন, বিসর্জনের পরে অনেক সময়ে তাঁরা কাঠামো তুলে নিজেদের কাজে ফের ব্যবহার করেন।

    তবে সব কাঠামো তুলে ফেলা সম্ভব না হওয়ায় মাটি, রং, প্লাস্টিক ও কাপড়ের অংশ নদী বা খাল-বিলের জলে থেকে যায়, যার ফলে বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

    বাগদার বিডিও প্রসূণ প্রামাণিক বলেন, ‘‘নদী, খাল, বিল বা দিঘি— যেখানেই প্রতিমা বিসর্জন হোক না কেন, জল দূষণ রোধে কাঠামো দ্রুত তোলার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’

    প্রশাসনের এই পদক্ষেপে স্থানীয় মানুষের একাংশ ও পরিবেশপ্রেমীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে প্রতিমা বিসর্জনের পরে জলাশয়গুলির দূষণ অনেকটাই কমবে এবং জলজ প্রাণী, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)