জলপাইগুড়ি শহরের ‘স্পন্দন’ সংস্থার উদ্যোগে দুই দশক ধরে জলপাইগুড়ি সরকারি কোরক হোমে বসছে এমন ভাইফোঁটার আসর। এই সংস্থার উদ্যোগে ২০০৪ সাল থেকে কোরক হোমের আবাসিকদের কপালে সম্প্রীতির ফোঁটা এঁকে দিচ্ছেন স্থানীয় বোন, দিদিরা।
ভাইফোঁটার জন্যে বছরভর প্রতীক্ষায় থাকে তিস্তাপারের কোরক হোমের শিশু, কিশোরেরা। বৃহস্পতিবার সকালে হোমের নিজস্ব হলঘরে ভাইফোঁটার আসর বসে। আবাসিকেরা নিজেদের আঁকা ছবিতে তৈরি কার্ড ও হাতে তৈরি নানা সরঞ্জাম বোনেদের হাতে তুলে দেয়। বোনেরা ভাইদের হাতে মিষ্টি ও চকোলেট তুলে দেয়। এক আবাসিকের কথায়, ‘‘বাড়িতে দিদির হাতে ফোঁটা নেওয়ার তো কোনও সুযোগ নেই। এই হোমে ফোঁটা নিতে পেরে সত্যিই খুব ভাল লাগল। সারা বছর ধরে অপেক্ষায় থাকি কবে আসবে ভাইফোঁটার এই দিনটি।’’
১০ জন বাংলাদেশি শিশু-কিশোর ছাড়াও মায়ানমারের চার জন, নেপালের দুই জন-সহ অন্তত ৮৯ জন আবাসিকের কপালে ফোঁটা দেন হোম লাগোয়া পাড়ার বোন, দিদিরা। তিস্তাতীরের রেশমী খাতুন, ঝুমা খাতুন, সুরভি মণ্ডল, মৌমিতা চট্টোপাধ্যায় হোমের আবাসিক ভাইদের কপালে সম্প্রীতির ফোঁটা দেয়।
উদ্যোক্তাদের তরফে অঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘শহরের বিভিন্ন মানুষ আমাদের এই কর্মসূচিতে সহযোগিতা করেন। সদস্যদের আর্থিক সহায়তায় এই কর্মসূচি।’’ হোম সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরের মেনুতে ভাত, ডাল, ভাজা, তরকারি, পাঁঠার মাংস ও মিষ্টি দেওয়া হয় আবাসিকদের।
হোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হোমে দোল, দুর্গাপুজো, ভাইফোঁটা, ইদ— সব উৎসবই পালন করা হয়। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ভাইফোঁটার আসর ঘিরে আবাসিকদের মধ্যে যথেষ্ট উৎসাহ দেখা যায়। এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ওএসডি শুভাশিস ঘোষ, জলপাইগুড়ি নাগরিক সংসদের সভাপতি পান্থ দাশগুপ্ত, শিক্ষানুরাগী সৌপায়ন মিত্র, কোয়েলা গঙ্গোপাধ্যায়। হোম সুপার গৌতম দাস বলেন, ‘‘এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। সম্প্রীতির আবহেই ভাইফোঁটার আসর বসে হোমে।’’