• গণ-ভাইফোঁটায় জনসংযোগে তৃণমূল, সৌজন্য খড়্গপুরে
    আনন্দবাজার | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • বছর ঘুরলেই বিধানসভার ভোট। তার আগের শেষ ভাইফোঁটায় জনসংযোগ সারল তৃণমূল। খড়্গপুরে যুযুধান নেতা-নেত্রীকেও দেখা গেল ভাইফোঁটায়। তবে সেভাবে দেখা গেল না বিজেপিকে।

    তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে খড়্গপুরের পুরপ্রধানের পদ ছাড়তে হয়েছিল প্রদীপ সরকারকে। এসেছিলেন কল্যাণী ঘোষ। দু’জনের পারস্পরিক সম্পর্ক শীতল। মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রদীপ মাঝে মধ্যেই বর্তমান পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে মুখে খোলেন। প্রদীপের সময় নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরব হতে দেখা যায় কল্যাণীকেও। এ দিন সেই প্রদীপকেই বাড়ি গিয়ে ভাইফোঁটা দিলেন পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ। ‘দিদি’ কল্যাণীকে শাড়ি উপহার দিয়েছেন ‘ভাই’ প্রদীপ। কল্যাণী প্রদীপকে পাঞ্জাবী উপহার দিয়েছেন। প্রদীপ বলছেন, ‘‘এই নিয়ে তিনবার কল্যাণীদি ভাইফোঁটা দিলেন। ব্যক্তিগত সম্পর্ক অন্য জায়গায়। কিন্তু মানুষের অসুবিধা হলে জনপ্রতিনিধি হিসাবে নিজের দিদি হলেও সমালোচনা করব। ব্যক্তি মানুষ নয়, তখন তো পুরপ্রধানের কাজের সমালোচনা করি এবং করব।’’ কল্যাণীও বলেন, ‘‘কয়েক বছর ধরেই প্রদীপকে ভাইফোঁটা দিই। পুরসভার কাজ নিয়ে মতানৈক্য হতেই পারে। ব্যক্তিগত সম্পর্ক আলাদা জায়গায়।’’

    মেদিনীপুর শহরের একাধিক ওয়ার্ডে তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্যোগে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান হয়েছে। তৃণমূল পুর প্রতিনিধি মৌসুমী হাজরার উদ্যোগে গণ-ভাইফোঁটার আয়োজন ছিল শহরের কামারপাড়ায়। পরিচালনায় ছিল স্থানীয় রাণা স্পোর্টিং ক্লাব। ছিলেন বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা প্রমুখ। সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহর মহিলা তৃণমূলের উদ্যোগেও গণ-ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়েছিল। ছিলেন শহর মহিলা তৃণমূলের সভাপতি মৌ রায়। মেদিনীপুরে ভাইফোঁটার একাধিক অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে বিজেপি‌ নেতাকর্মীদেরও। সেই সব অনুষ্ঠান অবশ্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয়েছে।

    গড়বেতা ২ (এ) সাংগঠনিক ব্লকের তৃণমূল ও মহিলা তৃণমূলের উদ্যোগ গোয়ালতোড়ে চলমান গণ-ভাইফোঁটার আয়োজন হয়। ব্লক সভাপতি সুধাংশুশেখর মণ্ডল, মহিলা সভানেত্রী সুমিত্রা দে কুণ্ডু বলেন, ‘‘প্রায় চার কিলোমিটার পথ ঘুরে গণ-ভাইফোঁটার আয়োজন হয়েছিল।’’ ছিলেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, জেলা পরিষদ সদস্য চন্দন সাহা প্রমুখ। গড়বেতা ১ ব্লক তৃণমূলের উদ্যোগে গণ-ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়েছিল বিকেলে। ছিলেন বিধায়ক উত্তরা সিংহ প্রমুখ।

    দলীয় আয়োজন হল না কেন? বিজেপির এসসি মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মদন রুইদাস বলেন, ‘‘আমাদের অনেকেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভাইফোঁটা পালন করেছেন। কয়েক জায়গায় কার্যকর্তারা ভাইফোঁটার আয়োজনও করেছিলেন।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য দিবাকর ভুঁইয়া মনে করিয়েছেন, ‘‘পার্টির উদ্যোগে ভাইফোঁটা সেভাবে পালন হয় না। তবে উৎসবের দিনগুলিতে আমরা রাস্তাতেই ছিলাম।’’ ঘাটাল মহকুমায় সরাসরি তৃণমূলের উদ্যোগে ভাইফোঁটার আয়োজন হয়নি। তবে তৃণমূলের অনেক নেতা-নেত্রী বিভিন্ন ক্লাব বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অনুষ্ঠানে ছিলেন। ঝাড়গ্রাম জেলাতেও রাজনৈতিক দলের ভাইফোঁটার আয়োজন সেভাবে দেখা যায়নি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)