সংখ্যালঘু বুথে এজেন্ট দিতে ব্যর্থতা, দলেই প্রশ্নে বিজেপি
আনন্দবাজার | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পর্যবেক্ষণ (এসআইআর) নিয়ে তোড়জোড় চলছে। এই পরিস্থিতিতে দলের প্রস্তুতি কত দূর, তা জরিপ করতে রাজ্যের তরফে জেলায় প্রতিনিধি পাঠাতে চলেছে বিজেপি। এ দিকে, জেলার বেশির ভাগ সংখ্যালঘু বুথে ‘বুথ লেভেল এজেন্ট’ (বিএলএ ২) দেওয়া যায়নি। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে।
বিজেপি সূত্রে খবর, শনিবারই রাজ্যের প্রতিনিধি জেলায় আসতে পারেন। ওই দিন দলের বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর, দুই সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে পৃথক ভাবে বৈঠকে বসার কথা। ‘এসআইআর’ নিয়ে দলের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখবেন তিনি। পাশাপাশি, বিএলএ২ নিয়োগ কত দূর এগিয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা। দলীয় সূত্রে খবর, বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় দেড়শোটির বেশি ও বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলায় প্রায় ৫০টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বুথ রয়েছে। তার বেশির ভাগেই বিএলএ ২ দেওয়া যায়নি। ওই সব বুথে লাগোয়া বুথ থেকে বিএলএ ২ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল বিজেপি। সব ক্ষেত্রে তাও করা যাচ্ছে না বলে দলীয় নেতৃত্বের দাবি। এ ক্ষেত্রে কর্মীরা সংশ্লিষ্ট বুথের বাসিন্দা না হওয়ায় স্থানীয়দের চিনতে সমস্যা হচ্ছে বলেও কেউ কেউ দাবি করছেন।
এই পরিস্থিতিতে জেলা নেতৃত্বের দাবি, সংখ্যালঘু এলাকাগুলির যোগ্য ভোটারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা দলের তরফে বানানো হয়েছে। এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন সেই তালিকার সঙ্গে ভোটারদের মিলিয়ে দেখা হবে। দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “কয়েকটি সংখ্যালঘু বুথ ছাড়া সবেতেই বুথ এজেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে। আমরা প্রস্তুত। সে কথাই বৈঠকে জানাব।”
এর পাশাপাশি, বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) নিয়োগে বহু ক্ষেত্রে কমিশনের নীতি প্রশাসন মানেনি বলে অভিযোগ তুলছে বিজেপি। দলের দাবি, কমিশনের নির্দেশ না মেনে বহু বুথে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ‘বিএলও’-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে জানানো হচ্ছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তারাশঙ্কর রায় বলেন, “বিজেপি নিজেদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ঢাকতে প্রশাসনের ঘাড়ে দায় চাপাতে চাইছে। আমাদের আশঙ্কা এসআইআর হলে সেই প্রক্রিয়াতেও ওরা গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করতে পারে।”
তবে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তি বলেন, “সাংগঠনিক দুর্বলতার কোনও ব্যাপার নেই। সর্বত্রই আমরা বিএলএ ২ নিয়োগ করেছি। কিছু সংখ্যালঘু বুথে সংখ্যালঘুরাই এগিয়ে এসেছেন আমাদের এজেন্ট হতে। কারণ তাঁরাও চান না ভিন্ দেশের কেউ এসে এ দেশে অবৈধ ভাবে বসবাস করুক।” তাঁর সংযোজন, কমিশনের নির্দেশ অমান্য করে প্রশাসন যে সব চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ‘বিএলও’ করেছে, তাঁদের নামের তালিকা রাজ্য নেতৃত্বকে দেওয়া হয়েছে।