উন্নত যন্ত্র অমিল, যক্ষ্মা চিহ্নিত করার কাজে বিঘ্ন
আনন্দবাজার | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
উন্নত যন্ত্র (সিবিন্যাট) না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে যক্ষ্মা রোগী চিহ্নিত করার কাজ। এর ফলে যক্ষ্মা রোগ চিহ্নিতকরণের জন্য কফের নমুনা পরীক্ষার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিতাভ সাহা জানাচ্ছেন, কফ পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল কলেজে চাপ পড়ছে।
যক্ষ্মা রোগীদের চিহ্নিত করার জন্য উন্নত মানের যন্ত্র সিবিন্যাট (কার্টিজ বেসড নিউক্লিক অ্যাসিড অ্যাম্পিফিকেশন) যন্ত্র বছর দু’য়েক আগে আগুন লেগে পুড়ে যায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। স্বাস্থ্য ভবন থেকে এখনও পর্যন্ত নতুন সিবিন্যাট যন্ত্র পায়নি মেডিক্যাল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু মেডিক্যাল কলেজই নয়, রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার দু’টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সিবিন্যাট যন্ত্র বা টুন্যাট যন্ত্রের অভাবে যক্ষ্মা রোগী চিহ্নিত করার কাজ কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় যক্ষ্মা প্রতিরোধ প্রকল্পে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং বিভিন্ন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই যন্ত্র থাকা দরকার। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার অধীন মুরারই ২ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং রামপুরহাট ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সিবিন্যাট যন্ত্র নেই। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টুন্যাট যন্ত্রের মাধ্যমে বর্তমানে যক্ষ্মা চিহ্নিতকরণ পরীক্ষা করা হয়।
যন্ত্রের অভাবে রামপুরহাট ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের যক্ষ্মা পরীক্ষার জন্য রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপর নির্ভর করতে হয়। আবার মুরারই ২ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের যক্ষ্মা পরীক্ষার রোগীদের নলহাটি ২ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিতাভ সাহা বলছেন, ‘‘মেডিক্যাল কলেজে সিবিন্যাট যন্ত্র না থাকার ফলে রোগী চিহ্নিত করার কাজ কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে। যক্ষ্মা রোগীদের দ্রুত চিহ্নিত করার জন্য সিবিন্যাট যন্ত্র অত্যন্ত কার্যকর।’’
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ পলাশ দাস জানান, সিবিন্যাট যন্ত্রের বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবনে জানানো আছে। স্বাস্থ্য ভবন থেকে পাওয়া গেলে হাসপাতালে যক্ষ্মা রোগীদের পরীক্ষার জন্য যন্ত্রটিকে কাজে লাগানো হবে বলে তিনি জানান।
স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় মোট যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩৭৪ জন। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৬৪৫ জনে। ২০২৪ সালে জেলায় যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ছিল ২৭১১ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম দু’মাসে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা সাড়ে চারশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। ওই আধিকারিক জানান, জেলার যতজন যক্ষ্মা আক্রান্ত হন, তাঁর মধ্যে ৮৬ শতাংশই ওষুধে সুস্থ হয়ে যান। ৬ শতাংশ রোগীর যক্ষ্মার কারণে মৃত্যু হয়।