উৎসবের ‘উদ্যাপনে’ পথে নেমে বেপরোয়া যাপনের পুরনো রোগের বদল হল না এ বছরেও।পথের আইন ভাঙা বন্ধ হওয়া তো দূর অস্ত, বরং ভয় ধরিয়েছে শহরের রাস্তায় মত্ত চালকদের দাপাদাপির ছবি। পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিসংখ্যানও লাফিয়ে বেড়েছে গত তিন দিনে। বাদ যায়নি বিনা হেলমেটে বাইক চালানো, বেপরোয়া গতিতে বাইক চালানো, গতিসীমা না মানার মতো পথের অন্যান্য বিধিভঙ্গও। উৎসবের দিনেদুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। যা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, উৎসবের নামে পথের এই বেপরোয়া যাপন বন্ধ হবে কবে?
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, কালীপুজো এবং তার পরবর্তী দু’দিনে পথের বিধিভঙ্গ আটকাতেক লকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই পুলিশি ব্যবস্থায় তিন দিনে মোট ১৬৬১টি মামলা রুজুকরতে হয়েছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশকে। এর মধ্যে গত সোমবার, কালীপুজোর দিনেই সব থেকে বেশি, ৮৮২টি মামলা রুজু হয়েছে।পথ-বিধি ভঙ্গে মামলা রুজুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভয় ধরাচ্ছে মত্ত চালকদের বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিসংখ্যান। এই তিন দিনেএ নিয়ে প্রায় ২৫০টি মামলা রুজু হয়েছে। লালবাজার সূত্রের খবর, মত্ত চালকদের বিরুদ্ধে সব থেকে বেশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছেকালীপুজোর দিনেই। এক দিনে কলকাতা পুলিশ এলাকায় ৯৯টি মামলা রুজু হয়েছে। পরবর্তী দু’দিন, অর্থাৎ মঙ্গল ও বুধবারএকই আইন ভাঙার দায়ে যথাক্রমে ৬৯ এবং ৬৪টি মামলাদায়ের হয়েছে। এ ছাড়াও পথের বাকি বিধি ভাঙার সংখ্যাও লাফিয়ে বেড়েছে।
উৎসবের তিন দিনে বিনা হেলমেটে বাইকচালকদেরদৌরাত্ম্যও দেখা গিয়েছে শহরের পথে। কালীপুজোর দিন বিনা হেলমেটে বাইক চালানোর দায়ে ৩৩১ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী দু’দিনে এই সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৮৬ এবং ৮৫টি। এ ছাড়াও বাইক-আরোহীর হেলমেট না থাকা, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য প্রতিদিন গড়ে ১০০টিরও বেশি মামলা রুজু হয়েছে।
উৎসবের তিন দিনে শহরের রাস্তায় প্রায় ১০টি দুর্ঘটনাঘটেছে, হয়েছে প্রাণহানিও। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তিন দিনে নথিভুক্ত এক জনের মৃত্যুর পাশাপাশি প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েক জনের আঘাত গুরুতর।
লালবাজারের তরফে যদিও উৎসবের আগে থেকে পথ-বিধি ভাঙা আটকাতে একাধিকব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এমনকি, চালকদের সচেতনতা বাড়াতে একাধিক পদক্ষেপও করা হয়েছিল। তার পরেও বেপরোয়া চালকদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হল না কেন? লালবাজারের যদিও ব্যাখ্যা, পথ দুর্ঘটনা এবং তার জেরে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমানো গিয়েছে। বিধি ভাঙা আটকাতেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘আগের থেকে ট্র্যাফিক সচেতনতা বাড়ানো গিয়েছে। পাশাপাশি, বিধি ভাঙা আটকাতে বিশেষ ব্যবস্থা এবং নাকা তল্লাশির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আইন ভাঙলে কড়া অবস্থান নেওয়া হয়েছে।’’