• নথিভুক্ত সংগঠন ছাড়াই কীভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ আসে আরএসএসের একাউন্টে? বিস্ফোরক দাবি করল কংগ্রেস!...
    আজকাল | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: আরএসএস (RSS) — দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠনগুলির একটির তহবিলের উৎস নিয়েই প্রশ্ন তুললেন কর্ণাটকের মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খাড়ে ও প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বি কে হরিপ্রসাদ। তাঁদের অভিযোগ, সংগঠনটি আজও সরকারিভাবে নিবন্ধিত নয়, যাতে তারা আইন ও সরকারি নিয়ন্ত্রণ এড়িয়ে চলতে পারে।

    মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খাড়ে বলেন, “আরএসএস যদি সত্যিই আইনসম্মতভাবে কাজ করে, তাহলে দেখান তো কোথায় তার রেজিস্ট্রেশন? যদি আরএসএস রেজিস্ট্রেশন না থাকে, তাহলে নথি আমার সামনে আনুন—তাতেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”

    তিনি আরও যোগ করেন, “এই অ-নিবন্ধিত সংগঠনের অর্থ কোথা থেকে আসে? পোশাক বানানো, শোভাযাত্রা করা, ঢাক-ঢোল কেনা, বাড়ি  তৈরি—এই সব খরচের টাকা আসে কোথা থেকে? যদি তারা নিবন্ধিত না হয়, তাহলে কীভাবে তহবিল পায়?”

    প্রিয়াঙ্ক খাড়ে এর আগে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে চিঠি লিখে সরকারি কর্মচারীদের আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন এবং সরকারি স্থানে সংগঠনটির কার্যকলাপে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি তুলেছিলেন।

    মন্ত্রী দাবি করেন, আরএসএস ইচ্ছাকৃতভাবে রেজিস্ট্রেশন করেনি, যাতে তারা কর প্রদান বা আর্থিক স্বচ্ছতার আওতায় না পড়ে। তিনি বলেন, “যদি তারা নিবন্ধিত হত, তাহলে কোম্পানি আইন, সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট, এনজিও আইন অনুযায়ী কর দিতে হত, বিদেশি বা দেশীয় অনুদানের তথ্য প্রকাশ করতে হত। এসব এড়ানোর জন্যই তারা নথিভুক্তি করেনি।”

    একই সুরে কংগ্রেস নেতা বি কে হরিপ্রসাদ বলেন, “আরএসএস এত বছর ধরে আইনি ও জনসাধারণের পর্যালোচনা থেকে নিজেদের আড়াল করে রেখেছে, কারণ এটি নিবন্ধিত নয়। কংগ্রেস ও বিজেপি—উভয় দলই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত, কিন্তু আরএসএস কোথায় নিবন্ধিত?”

    হরিপ্রসাদ আরও অভিযোগ করেন, “বিজয়াদশমীর সময় তারা ‘গুরু দক্ষিণা’র নামে দান সংগ্রহ করে। কিন্তু গত ১০০ বছরে সেই অর্থের হিসাব কি কখনও প্রকাশ করেছে? সেখানে কালো টাকার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। ইডি, আয়কর দপ্তর  বা সিবিআই কি কখনও আরএসএসের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে? ৭০০ কোটি টাকার বিল্ডিং বানানো হয়েছে—সেই অর্থ কোথা থেকে এল? পুরো প্রক্রিয়াটাই বেআইনি।”

    অন্যদিকে, বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সি এন অশ্বত নারায়ণ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “প্রতিটি সংগঠনের নিবন্ধিত হওয়া বাধ্যতামূলক নয়। গণতন্ত্রে প্রত্যেক ব্যক্তি ও সংগঠন তাদের কার্যক্রম আইনসম্মতভাবে পরিচালনা করার স্বাধীনতা রাখে। আরএসএস একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন—যা দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও শিক্ষাগত উন্নয়নে কাজ করছে।”

    কংগ্রেস নেতারা যেখানে আরএসএসের আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সেখানে বিজেপি পক্ষ দাবি করেছে যে সংগঠনটির কার্যকলাপ আইনসম্মত ও সাংবিধানিক। তবে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—এক শতাব্দী পেরিয়ে আসা আরএসএসের প্রকৃত অর্থনৈতিক কাঠামো কি কখনও জনসমক্ষে উন্মুক্ত হয়েছে?

    রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বিতর্ক নতুন করে আরএসএসের সাংগঠনিক গঠন ও অর্থনৈতিক উৎস নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)