তিপ্রা মথার ডাকা বনধে রক্তাক্ত ত্রিপুরা, ব্যাপক সংঘর্ষে আহত অন্তত ১৫
প্রতিদিন | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
প্রণব সরকার, আগরতলা: অনুপ্রবেশকারীদের দেশছাড়া-সহ ৮ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার বন্ধের ডাক দিয়েছিল ত্রিপুরায় বিজেপির শরিক দল তিপ্রা মথা। সেই বন্ধকে কেন্দ্র করে হিংসায় উত্তাল হয়ে উঠল গোটা রাজ্য। তিপ্রা মথার সমর্থকদের হামলায় আহত হয়েছেন সরকারি আধিকারিক-সহ অন্তত ১৫ জন। বনধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যে ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, অনুপ্রবেশ বন্ধ-সহ ৮ দফা দাবিতে রাজ্যে বন্ধের ডাক দিয়েছিল আদিবাসী সংগঠন তিপ্রা সিভিল সোসাইটি। এই বন্ধকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে ধোলাই জেলার শান্তিবাজার এলাকা। বন্ধের বিরোধিতা করায় এই এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বচসা বাধে তিপ্রা সমর্থকদের। সেই বচসাই ভয়াবহ আকার নেয়। ভাঙচুরের পাশাপাশি ওই অঞ্চলে একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলে পুলিশ ও সরকারি আধিকারিকদের উপর হামলা চলে। ইঁটের আঘাতে আহত হন এক পুলিশ কর্তা বিডিও অভিজিৎ চৌধুরির গাড়িতেও হামলা চলে। ইঁটের আঘাতে এক ব্যবসায়ীর চোখ নষ্ট হয়। আহত হন এর একাধিক সরকারি কর্তা। পরিস্থিতি সামলাতে রাতেই লাঠিচার্জের পাশাপাশি গুলি ছোড়ে পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি আধাসেনা ও টিএসআই মোতায়েন করা হয় ওই অঞ্চলে। অনির্দিষ্ট কালের জন্য জারি হয় ১৬৩ ধারা।
অভিযোগ উঠছে বন্ধকে কেন্দ্র করে এই সহিংসতার নেপথ্যে রয়েছেন তিপ্রা বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা। গোটা ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। শুক্রবার হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। পাশাপাশি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যারা রাজ্যকে অস্থির করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সরকার এই ধরনের ঘটনা কোনওভাবেই বরদাস্ত করবে না।’ এই হামলার ঘটনায় বহিরাগতদের উসকানি থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শরিকদলের এহেন কর্মকাণ্ডে যারপরনাই ক্ষুব্ধ বিজেপি। ত্রিপুরার বিজেপি সভাপতি তথা সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, “সিভিল সোসাইটির ডাকা ২৪ ঘণ্টার বন্ধকে কেন্দ্র করে যা ঘটেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। যে ইস্যুগুলির উপর এই বন্ধ ডাকা হয়েছিল সবটাই বিধানসভায় আলোচনা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সে বিষয়ে তাঁর জবাব দিয়েছেন। এবং ত্রিপাক্ষিক চুক্তি নিয়ে যে সমস্ত আলোচনা ও কথা হয়েছে সেই ব্যাপারে দিল্লি সিদ্ধান্ত নেবে। এরপরও যে হিংসা ঘটল তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”