অমরাবতী: ভোর সাড়ে তিনটে। অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলের ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কে দাউ দাউ করে জ্বলছে বাস। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে আশপাশের এলাকা। জানালার কাচ ভেঙে বেরিয়ে আসার মরিয়া চেষ্টা করছেন যাত্রীরা। রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন বেশ কয়েকজন। আগুনে ঝলসে গিয়েছে অনেকের দেহ। রাজস্থানের পর প্রায় একই ধরনের ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী থাকল অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল। শুক্রবার ভোরে দক্ষিণের এই রাজ্যে এসি বাসে আগুন লেগে মৃত্যু হল ২০ জনের। অনেক যাত্রীই গুরুতর জখম। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। বাসে যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪৩। জানা গিয়েছে, হায়দরাবাদ থেকে বেঙ্গালুরুগামী এই বাসের সঙ্গে একটি বাইকের ধাক্কা লাগে। এরপরই বাসটিতে আগুন লেগে যায়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। কয়েকদিন আগেই রাজস্থানের জয়সলমিরে সেনা ঘাঁটির কাছে একটি এসি বাসে অগ্নিকাণ্ডে ২০ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল।
মধ্যরাতে হায়দরাবাদ থেকে রওনা দিয়েছিল বাসটি। ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ কুর্নুলের চিন্নাটেকুরু গ্রামের কাছে বাসের সঙ্গে একটি বাইকের ধাক্কা লাগে। কুর্নুলের পুলিশ সুপার বিক্রান্ত পাতিল জানিয়েছেন, সংঘর্ষের পর বাসের নীচে আটকে যায় বাইকটি। ওই অবস্থাতেই বাইকটিকে হিঁচড়ে নিয়ে যায় বাস। এই ঘর্ষণের জেরে বাইকে আগুন লেগে যায়। মুহূর্তেই সেই আগুন বাসের তেলের ট্যাঙ্কারে পৌঁছয়। জ্বলতে শুরু করে বাসটি। শর্ট সার্কিটের জেরে স্বয়ংক্রিয় দরজাও অকেজো হয়ে যায়। প্রাণ বাঁচাতে অনেক যাত্রী জানালা ভেঙে বাইরে বেরনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বেশিরভাগই বাইরে বেরোতে পারেননি। যাত্রীদের আর্তচিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ ও দমকল। আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাসটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, প্রথমে দমন-দিউতে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল। পরে আবার ওড়িশায় নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। একাধিকবার ট্রাফিক বিধি অমান্য করার জেরে ওই বাসের নামে ১৬টি চালান কাটার পাশাপাশি মোটা টাকার জরিমানাও করা হয়েছিল।
দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।