সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: হারিয়ে যাওয়া গোরু খুঁজতে বেরিয়ে হাতির হামলায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। ঘটনাটি নাগরাকাটা ব্লকের সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নিউখুনিয়া বস্তির। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এনিয়ে গত একমাসে হাতির হামলায় শুধুমাত্র সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মোট চারজনের মৃত্যু হল।
পুলিশ ও বনদপ্তর জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম শম্ভু মঙ্গর (৫০)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শম্ভুর গোরু বাড়িতে ফেরেনি। পাশেই রয়েছে পানঝোরা জঙ্গল। সেই জঙ্গলে স্থানীয়দের গোরুগুলি দিনভর চড়ে বেড়ায়। অন্যদের মতো শম্ভুর গোরুও সারাদিন চড়ে বেড়ানোর পর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আসে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর গোরু বাড়ি ফেরেনি। হাতি অধ্যুষিত এলাকা বলে শম্ভু মঙ্গর রাতে গোরু খোঁজার আর ঝুঁকি নেননি। শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠেই গোরু খুঁজতে গ্রামের জমির দিকে যান। জমির আশেপাশে থাকা ঝোপের আড়ালে ছিল একটি হাতি। শম্ভু হাতি থাকার ব্যাপারটি বুঝতে না পেরে হাতিটির কাছে চলে যায়। হাতিটি শম্ভুকে কাছে পেয়ে ধরে ফেলে। পা দিয়ে পিষে দেয়। শম্ভুর দেহ ছিন্নভিন্ন করে দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে প্রথমে আসে মেটেলি থানার পুলিশ। এরপর আসেন চালসা ও খুনিয়া রেঞ্জের বনকর্মীরা। পুলিশ সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দা তথা সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য স্বপ্না মঙ্গর বলেন, আমাদের এখানে প্রায় দিনই হাতি চলে আসে। পাশেই পানঝোরা বস্তিতে গত রবিবার কাঞ্চা তামাংকে মেরে ফেলে একটি হাতি। এদিন গোরু খুঁজতে গিয়ে শম্ভু মঙ্গর হাতির হামলায় মারা গেল। আমরা ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাই। চালসার রেঞ্জার প্রকাশ থাপা বলেন, মৃতের পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এই গ্রাম পঞ্চায়েতের টন্ডুতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিজয় মাঝির মৃত্যু হয়েছিল হাতির হামলায়। তার আগে ১৫ সেপ্টেম্বর খয়েরবাড়ি নিউমার্কেটে ধান খেত পাহারা দিয়ে গিয়ে হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয় বিশনাথ ওরাওঁয়ের। এদিকে, গত রবিবার একইভাবে খেতের ধান পাহারা দিতে গিয়ে পানঝোরা বনবস্তিতে হাতির হামলায় মারা যান কাঞ্চা তামাং। এদিন সকালে নিউখুনিয়া বস্তিতে বুনো হাতির হামলায় মৃত্যু হল শম্ভু মঙ্গরের।