শিলিগুড়িতে বহু নার্সিংহোমের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
বর্তমান | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়িতে নার্সিংহোমগুলির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। অভিযোগ, কিছু নার্সিংহোমে অগ্নিকাণ্ডের মোকাবিলা করার মতো সুপরিকাঠানো নেই। দেওয়ালে ঝোলানো সরঞ্জামগুলির মেয়াদও উত্তীর্ণ। এমনকী, কোনও কোনও নার্সিংহোম ফায়ার লাইসেন্সও নিয়মিত নবীকরণ করছে না বলে অভিযোগ। শহরের একটি নার্সিংহোমে অগ্নিকাণ্ডের পর এনিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। ইতিমধ্যে ফায়ার লাইসেন্স সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একডজন নার্সিংহোমের কাছে কৈফিয়ত তলব করেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। একই সঙ্গে তারা নার্সিংহোমগুলির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে অভিযানে নামছে। এজন্য দমকল বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বিশেষ টিম গড়ছে বলে খবর।
দার্জিলিং জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ তুলসী প্রামাণিক বলেন, শিলিগুড়ি সহ জেলায় বেশকিছু নার্সিংহোমে আগুন নেভানোর পরিকাঠামোয় ত্রুটি রয়েছে বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে বেশকিছু নার্সিংহোমের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। সাতদিনের মধ্যে তাদেরকে ত্রুটি মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা কার্যকর না হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। এজন্য একটি বিশেষ পর্যবেক্ষণ টিম গড়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাতে শহরের হাকিমপাড়ায় বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি নাসিংহোম। চাঞ্চল্যকর সেই ঘটনার পর শহরের নার্সিংহোম, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, শহরের অলিগলিতে গজিয়ে উঠেছে নার্সিংহোম ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি। সেগুলির একাংশে অগ্নিকাণ্ডের মোকাবিলা করার মতো ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই। নেই জলের রিজার্ভার ও পাইপ লাইন। অধিকাংশ জায়গায় ফল্স সিলিং তৈরি করে বিদ্যুতের তার ঢেকে দেওয়া হলেও সেগুলি নিয়মিত দেখভাল করা হচ্ছে না।
এমনকী, দেওয়ালে ঝোলানো অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলির মেয়াদও উত্তীর্ণ। সেগুলিতে নিয়মিত গ্যাস রিফিলিং করা হয় না। তাছাড়া অনেক নার্সিংহোম ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবের যাতায়াতের রাস্তা সুগম নয়। দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারবে না। সেগুলিতে র্যাম্প নেই। সিঁড়ি সংকীর্ণ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যদপ্তরের নজরদারির অভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অবিলম্বে বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত স্বাস্থ্যদপ্তরের।
প্রশাসন সূত্রে খবর, শিলিগুড়ি শহর সহ গোটা দার্জিলিং জেলায় নার্সিংহোম ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি প্রায় ২০০টি। যারমধ্যে ৭৩টির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে ১৩টি সংস্থাকে শোকজ করা হয়েছে। সেগুলির মধ্যে কয়েকটির ফায়ার লাইসেন্স নবীকরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, নার্সিংহোম ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলির উপর নজর রাখা হয়েছে। কাজেই স্বাস্থ্যদপ্তরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয়। শীঘ্রই আবার প্রতিটি নার্সিংহোমের ‘ফায়ার অডিট’ করা হবে। এজন্য দমকল বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে অভিযানে নামা হবে।