নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: সংস্কারের পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পূর্ব বর্ধমানে বিভিন্ন রাস্তার হতশ্রী দশা হয়েছে। মোটা টাকা খরচ করে আবার রাস্তা সংস্কার করতে হচ্ছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে আধিকারিকদের দাবি। এই সমস্ত ঠিকাদারদের চিহ্নিত করে কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক শ্রেণির জনপ্রতিনিধি নিজেদের পছন্দের লোকজনদের কাজ পাইয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার বিনিময়ে তাঁদের পকেটও ভারী হচ্ছে। অনলাইন টেন্ডার হলেও জনপ্রতিনিধিদের কাছের নির্দিষ্ট কয়েকজন ঠিকাদার কাজ পাচ্ছে। তারা কাজ না পেলে অনেক সময় বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। সব জায়গাতেই সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় আবার রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদ এই কাজ করবে। নিজেদের লোকজনদের কাজ পাইয়ে দিতে যাতে কোনও রকমে অনিয়ম না হয়, তারজন্য বিশেষ নজরদারি রয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, গত বছর জেলার বিভিন্ন প্রান্তের রাস্তা সংস্কার হয়েছিল। অধিকাংশ রাস্তায় এখন বেহাল হয়ে গিয়েছে। খণ্ডঘোষ, রায়না, জামালপুর সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা সমস্যায় রয়েছেন। এখন গ্রামীণ রাস্তায় ওভারলোডিং গাড়ি চলাচলও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তারপরও রাস্তা বেহাল হয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এবার থেকে রাস্তা তৈরির কাজ করার সময় ইঞ্জিনিয়াররা একাধিকবার পরিদর্শন করবেন। তারা ‘জল মেশানো’ রিপোর্ট দিলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার নজরে রয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় কোন কোন রাস্তা সংস্কার করা হবে সেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি শহরের রাস্তাগুলির হাল খারাপ হয়ে গিয়েছে। জেলা সদর বর্ধমান শহরেও বহু রাস্তা বেহাল হয়ে রয়েছে। বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। বেশকিছু রাস্তায় পেভারব্লক বসানো হচ্ছে। পুজোর আগে তড়িঘড়ি রাস্তাগুলি খানাখন্দ ভরাট করা হয়েছিল। এখন ভালোভাবে রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। কাজ খারাপ হলে সেই ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের দাবি, জেলাজুড়েই কয়েকজন ঠিকাদার নজরে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অতীতেও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। ওই ঠিকাদাররা এবারও নিম্নমানের কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সংস্কারের পর নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। ওই সময়ের মধ্যে রাস্তা খারাপ হলে ঠিকাদারকে তা মেরামত করতে হবে। তা নাহলে টাকা আটকে দেওয়া হবে।