ব্যবসার নামে ২৮ লক্ষাধিক টাকা, সোনার গয়না হাতানোর অভিযোগে বর্ধমানে ধৃত ১
বর্তমান | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, বর্ধমান: মোটা টাকা লাভের টোপ দিয়ে যৌথভাবে কাঠের ব্যবসা করার নামে ২৮ লক্ষাধিক টাকা ও সোনার গয়না হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। ধৃতের নাম শেখ আজিম। তার আদি বাড়ি বর্ধমান শহরের সাহাচেতন এলাকায়। বর্তমানে সে শহরের রসিকপুরে থাকে। সেখান থেকেই বৃহস্পতিবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। টাকা আত্মসাতের কথা ধৃত স্বীকার করেছে বলে পুলিশের দাবি। ধৃতকে শুক্রবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধার করতে ধৃতকে ১০ দিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। ধৃতের পাঁচদিনের পুলিশি হেপাজত মঞ্জুর করেন সিজেএম।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের ছোটনীলপুর মধ্যপাড়ার বাসিন্দা অভিজিৎ দাস পেশায় মাছ ব্যবসায়ী। তাঁর সঙ্গে আজিম ও তার স্ত্রীর দীর্ঘদিনের পরিচয়। ২০২২ সালে তারা যৌথভাবে কাঠের ব্যবসা করার জন্য অভিজিৎকে প্রস্তাব দেয়। কাঠের ব্যবসায় মোটা টাকা লাভ হবে বলে জানায় তারা। দু’জনে মিলে ৫০ লক্ষ টাকা করে ব্যবসায় বিনিয়োগ করবে বলে স্থির হয়। কিছুদিনের মধ্যে আজিম ও তার স্ত্রীকে ২০ লক্ষ টাকা ব্যবসার জন্য দেন অভিজিৎ। কিছুদিন পর তিনি আরও সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা ব্যবসার জন্য দেন। বাকি টাকা জোগাড় করতে না পারায় তিনি ৯ ভরি সোনার গয়না দম্পতিকে দেন। সেই টাকা দেওয়ার পর কিছুদিনের মধ্যে তাদের অংশের টাকা দেবে বলে আজিম ও তার স্ত্রী জানায়। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ব্যবসা শুরু করা হবে বলে জানিয়েছিল তারা। কিন্তু, নির্ধারিত সময়ে তারা ব্যবসা চালু করেনি।
তার তিন-চার মাস পর অভিজিৎ তাদের কাছে ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চান। তখন তারা জানায়, তাদের টাকা এখনও জোগাড় হয়নি। কিছুদিনের মধ্যেই টাকা জোগাড় করে তারা ব্যবসা শুরু করবে। তারপরও বেশ কিছুদিন কেটে যায়। কিন্তু, ব্যবসা শুরু হয়নি। এনিয়ে তাগাদা করায় আজিম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের মধ্যে সব টাকা তাঁকে ফিরিয়ে দেবে বলে অভিজিৎকে আশ্বাস দেয়। কিন্তু, অক্টোবর মাস কেটে যাওয়ার পরও তারা টাকা দেয়নি। টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে ২৫ হাজার টাকা করে দেবে তারা। আর দ্বিতীয়বার দেওয়া সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা ২০২৫ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে একবারে পরিশোধ করে দেবে বলে আশ্বাস দেয় দম্পতি। কিন্তু, অভিজিৎ টাকা ফেরত পাননি। তাগাদা দেওয়ায় তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। সাহাচেতনের ঠিকানা ছেড়ে ওই দম্পতি রসিকপুরে চলে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাদের ঠিকানা খুঁজে পান অভিজিৎ। সেখানে গিয়ে তিনি টাকা ফেরত চান। তাঁকে মারধর করা হয়। এমনকী, খুনের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে অভিজিৎ সিজেএম আদালতে মামলা করেন। গ্রেপ্তার এড়াতে আজিম বর্ধমানের জেলা ও দায়রা আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করে। সেই আবেদন খারিজ করে দেন জেলা জজ।