• বোলপুরে অজয় নদ থেকে ফের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের বিশাল বোমা উদ্ধার
    বর্তমান | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা, সিউড়ি: অজয় নদ থেকে ফের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের বিশালাকার বোমা উদ্ধার হল। মাসখানেক আগেই বোলপুর থানার সিঙ্গি পঞ্চায়েতে লাউদহ গ্রামের কাছে ওই আমলের বোমা উদ্ধার হয়েছিল। বুধবারই ভারতীয় সেনা বোমাটি নিষ্ক্রিয় করেছে। তার বিকট শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে উঠেছিল। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একই এলাকায় ফের বোমা উদ্ধার হয়।

    স্থানীয়রা জানান, মাসখানেক আগে যেখানে বোমা পাওয়া গিয়েছিল; বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই জায়গা থেকে কয়েকশো মিটার দূরে বোমা দেখা যায়। অজয় নদে মাছ ধরতে গিয়ে স্থানীয় কয়েকজন ওই বিশালাকার ধাতব বস্তুটি দেখতে পান। খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার সকাল থেকেই কৌতূহলী মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। বোলপুর থানার পুলিশ এসে ওই ধাতব বস্তু ঘিরে রাখে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া বস্তুটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বোমা। পরপর দু’টি বোমা উদ্ধার হওয়ায় স্থানীয়রা এলাকায় খননকাজ চালানোর দাবি তুলেছেন। তাঁদের দাবি, এরকম আরও বোমা আছে কি না, তা দেখে প্রশাসন সেইমতো পদক্ষেপ করুক।

    বীরভূমে এধরনের সামরিক সরঞ্জাম আগেও উদ্ধার হয়েছে। বছরখানেক আগে দুবরাজপুরের লোবা থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার মর্টার শেল উদ্ধার হয়েছিল। ইতিহাসবিদরা জানান, বিশ্বযুদ্ধের সময় বীরভূম জেলায় সরাসরি কখনও বোমাবর্ষণ হয়নি। তবে বীরভূমের একাধিক জায়গায় ইংরেজদের সেনা ঘাঁটি ছিল। সেসময় জাপান প্রথমে রেঙ্গুন(ইয়াঙ্গন), পরে পুরো বার্মা দখল করে নেয়। স্বাভাবিকভাবেই, বার্মা লাগোয়া পূর্ববঙ্গ আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দেয়। সেকারণে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি বীরভূমেও ব্রিটিশ সরকার একাধিক সেনাঘাঁটি তৈরি করেছিল।

    সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পার্থশঙ্খ মজুমদার বলেন, রামপুরহাটের সুরিচুয়ায় ব্রিটিশ সরকার বিমানঘাঁটি তৈরি করেছিল। দুবরাজপুরের লোবা, বীরভূম লাগোয়া গুসকরাতেও সেনাশিবির ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অজয় নদের তীরবর্তী এলাকায় সামরিক মহড়া চলত। এখন নদীর স্রোত, ভাঙন ও পলি সরে যাওয়ায় মাটির নীচে চাপা পড়ে থাকা পুরনো সামরিক সরঞ্জাম বেরিয়ে আসছে।
  • Link to this news (বর্তমান)