নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায় একটি ঠান্ডা পানীয় তৈরির কারখানার বাথরুম থেকে উদ্ধার হল গাড়ি চালকের দেহ। তিনি ২২ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। মৃতের নাম কবীর হোসেন মোল্লা (৩১)। তাঁর বাড়ি রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুসুম্বা।
যুবকের মৃত্যু ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। কারণ বাথরুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। আবার মৃতদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ফলে এটি খুন, দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা সেটা স্পষ্ট নয়। দেহ উদ্ধার করে পুলিশ নিয়ে যেতে গেলে মৃতের পরিবার ও এলাকার লোকজন বাধা দেয়। ক্ষতিপূরণের দাবিতে চলে বিক্ষোভ। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলে, দেহ বের করতে দেওয়া হয় কারখানা থেকে।
কর্মীদের দাবি, শুক্রবার সকালে কারখানার অফিস ঘরের পাশে থাকা বাথরুম থেকে দুর্গন্ধ বেরচ্ছিল। সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা থানায় খবর দেন। এরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বাথরুমের উপরের ফাঁকা অংশ দিয়ে একজনকে নামানো হয়। তিনি দরজা খুলে দেওয়ার পর তদন্তকারীরা ঢুকে দেহ বের করে আনেন। মৃতদেহের মুখে ও হাতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। মৃতের দাদা শাবির মোল্লা বলেন, বুধবার সকালে কাজে বেরিয়েছিল ভাই। তারপর বাড়ি ফেরেনি। রাতে কারখানায় এসে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে ভাইয়ের খোঁজ করি। তাঁরা বলেন, এখানে কেউ নেই। বৃহস্পতিবার নরেন্দ্রপুর থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করা হয়। সেদিন পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এসেছিলাম কারখানায়। নিরাপত্তারক্ষী বলেন, কবীর এখানে নেই। আজ সকালে জানতে পারি, ভাইয়ের দেহ পাওয়া গিয়েছে বাথরুমে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, যুবক সরাসরি ওই কারখানার স্টাফ ছিলেন না। যে পরিবহণ সংস্থা এই ঠান্ডা পানীয় আনা নেওয়া করার গাড়ি ও চালক দেয় সেখানেই কাজ করত কবীর। মাস দুয়েক আগে এখানে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। প্রায় আট মাস আগে বিয়ে হয় কবীরের। তাঁর স্ত্রী লতিফা অন্তঃসত্ত্বা। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ছেলেকে খুন করা হয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ক্ষতিপূরণের দাবিতে যেভাবে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত।
পুলিশ, কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং রাজপুর সোনারপুর পুরসভার সিআইসি নজরুল আলি মণ্ডলের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক ধরে চলে আলোচনা। সিআইসি বলেন, মৃতের বাড়ির পক্ষ থেকে যে দাবি করা হয়েছিল, তা নিয়ে আলোচনা হয়। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।