গোষ্ঠীকোন্দল অব্যাহত, শাসনে কর্মীদের হাতেই আক্রান্ত তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান
বর্তমান | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: হাড়োয়া বিধানসভায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অব্যাহত। এবার তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধানকে মারধরের অভিযোগ উঠল বিধায়কের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। কীর্তিপুর ১ নং পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শেখ মোফাজ্জেল আলি আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে শাসন থানায় দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। এদিকে, হাড়োয়ার বিধায়ক রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে পোস্টার ও লিফলেট তৈরির ঘটনায় এক দোকানদারকে গ্রেফতার করেছে শাসন থানার পুলিশ। ধৃতের নাম শাকিব আলি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শাকিবের দোকান আমিনপুর বাজারে। তাঁর দোকানে আগে কিছু লিফলেট ও পোস্টার ছাপানো হয়েছে। নতুন করে আরও কিছু পোস্টাপ ছাপানোর প্রক্রিয়া চলছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দু’টি ঘটনারই পৃথক তদন্ত চলছে।
কিন্তু কোন প্রেক্ষাপটে মোফাজ্জেল আলির উপর হামলা? বারাসত ২ নং ব্লকের নতুন কমিটি ঘোষণা হতেই মোফাজ্জেল তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। অভিযোগ, শুক্রবার সকালের দিকে শেখ মোফাজ্জেলকে লক্ষ্য করে গালিগালাজ করছিল কীর্তিপুর ১ অঞ্চলের বিধায়ক ঘনিষ্ঠরা। প্রতিবাদ করায় ৬০ বছরের এক বৃদ্ধকে ধাক্কাধাক্কিও করা হয়। কিছুক্ষণ পর মোফাজ্জেল কৃষ্ণমাটি এলাকায় একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন। অভিযোগ, আচমকাই পিছন থেকে প্রাক্তন প্রধানের উপর হামলা চালায় বিধায়ক ও অঞ্চল সভাপতির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কয়েকজন। এলোপাতাড়ি চড়, কিল, ঘুষি মারা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয়রা প্রাক্তন প্রধানকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। চিকিৎসার পর শাসন থানায় গিয়ে আক্রমণকারী তারিকুল আলি ও রফিক আলির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। মোফাজ্জেল বলেন, ‘নতুন ব্লক সভাপতির বিরোধিতা করে আন্দোলন সংগঠিত করার জন্যই আমায় আক্রান্ত হতে হল। আমি তৃণমূলের প্রধান ছিলাম। সেই দলেরই কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হতে হল, এটা দুর্ভাগ্যজনক।’
এদিকে, শাসনের আমিনপুরে একটি জেরক্সের দোকানে চলছিল তৃণমূল নেতাদের নামে ‘বিতর্কিত’ লিফলেট তৈরির কাজ। বিষয়টি জানার পর দোকানে গিয়ে একাধিক লিফলেট বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। দোকান মালিক শাকিবকে গ্রেফতারও করেছে তারা। এনিয়ে তৃণমূল বিধায়ক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘লিফলেটের বিষয়টি নিয়ে আমি বহু আগেই বলেছি চক্রান্তের কথা। আমাকে কালিমালিপ্ত করতেই এসব করা হচ্ছিল। এবার তা প্রমাণ হল। পুলিশকে অনুরোধ করেছি, তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে।’ মারধরের প্রসঙ্গে রবিউলের যুক্তি, ‘উনি তৃণমূলের নয়, সিপিএমের লোক। তাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয় আসে না। পুলিশকে বলেছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে।’ পাল্টা সিপিএম নেতা আহমেদ আলি খান বলেন, ‘মোফাজ্জেল তৃণমূলের নেতা। ওঁর সঙ্গে সিপিএমের কোনও বিষয় নেই। দায় এড়াতে এসব কথা বলছেন বিধায়ক।’