বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া নির্বিঘ্নে নিরঞ্জন, নৈহাটিতে ভোর পর্যন্ত রাস্তায় লক্ষ মানুষ
বর্তমান | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: কালীপুজোর বিসর্জন ঘিরে সাজ সাজ রব নৈহাটিতে। শতাধিক প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে শুক্রবার। সারারাত ধরে চলেছে এই পর্ব। দেবীকে শেষ দেখা দেখতে রাস্তায় লক্ষ মানুষের ভিড়। নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন ছিল হাজারেরও উপর পুলিশকর্মী। বেচাকালী নিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয় শোভাযাত্রা। তবে দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার নেয়নি। যাতে কোন দুর্ঘটনা ঘটে সে কারণে ফেরিঘাট চত্বরের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছিল। দুপুর একটা কুড়ি থেকে নৈহাটি- চুঁচুড়া লঞ্চ সার্ভিসও বন্ধ করে দেওয়া হয়। মানুষের বক্তব্য, মোটের উপর নির্বিঘ্নেই কেটেছে নিরঞ্জন পর্ব।
শুক্রবার বড়োমাকে দিয়ে শুরু হয়েছিল বিসর্জন। কয়েক হাজার মানুষ গঙ্গা পর্যন্ত নিয়ে যান দেবীকে। অরবিন্দ রোডের বাড়ির ছাদগুলি থেকে বহু মানুষ ফুল ও বাতাসা ছুড়ে দেন। ঘাটের সামনে তৈরি হয়েছিল মঞ্চ। সেখান থেকে বিসর্জন মনিটর করেন পুলিশ কমিশনার মুরলিধর শর্মা। দুপুরে বন্ধ করার পর রাত আটটায় ফের খুলে দেওয়া হয় লঞ্চ সার্ভিস। বড়োমার বিসর্জনের পর নৈহাটির অন্য প্রতিমাগুলি বিসর্জন শুরু হয়। একে একে কদমকালী, বেচাকালী, নিউ স্টার ক্লাব, তৃণমূল হকার অ্যাসোসিয়েশনের কালী বিসর্জন হয়েছে। বিশাল শোভাযাত্রা সহকারে গঙ্গা পর্যন্ত গিয়েছে হকার, কাঠগোলা পুজো কমিটি বিজয় নগর ইত্যাদি। রাতভর শতাধিক ঠাকুর নিরঞ্জন হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে বিপত্তি ঘটে বেচাকালী ভাসানের ক্ষেত্রে। পুজো কমিটির সদস্যরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। মূর্তি রাস্তায় পড়ে যায়। দীর্ঘসময় ধরে প্রতিমা রাস্তায় পড়ে থাকার ফলে় অন্যান্য প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ কমিশনার বিসর্জন পর্ব নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি বলেন, ‘হাজারেরও বেশি ফোর্স ছিল।’ দেখা গিয়েছে একসময় ভিড় সামলাতে এক পুলিশকর্মী লাঠি উঁচিয়েছিলেন। তা দেখতে পেয়ে পুলিশ কমিশনার মঞ্চ থেকে নেমে এসে সেই কর্মীর সঙ্গে কথা বলেন। মানুষের আবেগ সামলানোর নির্দেশ দেন। নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বড়োমার আবেগ বেড়েই চলেছে। দেড় লক্ষ মানুষ দণ্ডি কেটেছেন। পুলিশ যেভাবে সামলেছে তার জন্য ধন্যবাদ দিতে হয়।’ বিসর্জন পর্বে উপস্থিত ছিলেন বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী, রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, নৈহাটির বিধায়ক সনৎ দে এবং অন্যান্য কাউন্সিলররা। বিসর্জনের শোভাযাত্রার ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। সুষ্ঠুভাবে অংশ নেওয়া গিয়েছে নিরঞ্জনে বলে বক্তব্য দর্শনার্থীদের।