বেদিয়াপাড়া কাণ্ড: কাউন্সিলার ঘনিষ্ঠ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
বর্তমান | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: দক্ষিণ দমদমের বেদিয়াপাড়া এলাকায় এক ব্যক্তির গায়ে পেট্রল ছোড়া এবং গায়ে আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনায় এবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হল। বৃহস্পতিবার নাগেরবাজার থানায় সুশান্ত দাস, সুমন ওরফে বাগান বন্দ্যোপাধ্যায়, সাগর ওরফে গৌতম শিকদার নামে তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৯, ১১৮(১) ও ৩(৫) ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শাসক দলের অন্দরে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। কারণ, অভিযুক্তরা স্থানীয় কাউন্সিলারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তাঁদের কাউন্সিলারের আশপাশে দেখা যায়। আক্রান্তের পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্তদের বাঁচাতে কাউন্সিলারের দলবল এসে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। যদিও কাউন্সিলার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বেদিয়াপাড়া তারকনাথ কলোনির বাসিন্দা রঞ্জিত কর্মকার। তিনি পেশায় অটো চালক। বুধবার রাতে পাড়ার কালীপুজোর ভাসানে রঞ্জিতবাবু স্থানীয়দের সঙ্গে রতনবাবুর ঘাটে গিয়েছিলেন। প্রতিমা নিরঞ্জন সেরে ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ তাঁরা সবাই বাড়ি ফেরেন। এরপর রঞ্জিতবাবু সহ পাড়ার বাকি বন্ধুরা এক জায়গায় বসে গল্প করছিলেন। ওই সময় তাঁদের কোনও একটি বাইকের তেল শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেই বাইকে তেল ঢোকানোর জন্য অন্য একটি বাইক থেকে কিছুটা তেল বের করা হয়েছিল। সেই সময় নিজেদের মধ্যে হাসি-ঠাট্টা থেকে বচসা শুরু হয়। তার মধ্যেই রঞ্জিতবাবুর পিঠে পেট্রল ছুড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর সিগারেট ধরানোর জন্য তাঁদের মধ্যে একজন দেশলাই ধরাতেই রঞ্জিতের পিঠে আগুন লেগে যায়। রঞ্জিতবাবুর স্ত্রী রুবি কর্মকার বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে কাউন্সিলার আমাদের বাড়িতেও আসেননি। আমার সঙ্গে দেখাও করেননি। অথচ তাঁর দলবল আমার আত্মীয়দের হুমকি দিচ্ছে। বলছে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে ফল ভালো হবে না। হাসপাতালে আমার স্বামীর সঙ্গে গিয়ে আলাদাভাবে কথা বলছে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি। অভিযুক্তরা কাউন্সিলারের সঙ্গে ঘোরে বলেই হয়তো পুলিশ এখনও তাদের গ্রেফতার করছে না। পুলিশ আমাদের অভিযোগ নিতেও অনেক গড়িমসি করেছে।’
স্থানীয় কাউন্সিলার তথা পুরসভার সিআইসি (ওয়াটার) মৃন্ময় দাস বলেন, ‘আমি প্রথম দিন থেকেই বলছি, কেউ অপরাধ করলে তাকে সাজা ভোগ করতে হবে। আমি আক্রান্ত ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছি। আমি চাই, পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনি পদক্ষেপ করুক। অনেকেই আমার সঙ্গে ঘোরে। তাদের কেউ কোথাও অন্যায় করলে পুলিশ আইন মেনে পদক্ষেপ করবে।’ তাঁর বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলেও দাবি করেন মৃন্ময়বাবু।