প্রাণ বাঁচানোর জন্য চিৎকার করছিলেন বাসে থাকা যাত্রীরা। ততক্ষণে দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করেছে বাসের একাংশ। অভিযোগ, সেই সময়ে বাসে থাকা যাত্রীদের সাহায্য করার বদলে পালিয়ে যান চালক। সহকারী চালক অবশ্য বাসের জানালা ভেঙে অনেককে উদ্ধার করেন। অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলের দুর্ঘটনা কমপক্ষে ১৯ জন বাসযাত্রীর প্রাণ কেড়েছে। মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইকের চালক বুচ্চালু শিব শঙ্করেরও। ওই ঘটনায় বাস চালকের ভূমিকা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই বাসের দুই ড্রাইভার মিরিয়ালা লক্ষ্মীয়া এবং গুড়িপতি শিব নারায়ণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ওই বেসরকারি এসি বাস হায়দরাবাদ থেকে বেঙ্গালুরুর দিকে যাচ্ছিল। ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ কুর্নুলের কাছে বাসের চালক এক বাইক আরোহীকে ধাক্কা দেন। তাতে বাইকটি বাসের তলায় ঢুকে যায় এবং সম্ভবত প্রথমে বাইকের এবং পরে বাসের জ্বালানির ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ ঘটে ভয়াবহ আগুন লাগে। ওই বাসটিতে ৪৩ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলেই মারা যান মোটরবাইকের চালক।
বাস থেকে কোনও রকমে বেরোতে পেরেছিলেন এক যাত্রী। তিনি সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাসের দরজা জ্যাম হয়ে গিয়েছিল। প্রাণ বাঁচানোর জন্য আমরা জানালা ভাঙার চেষ্টা করি। প্রথমে ঘুষি মারি, মাথা দিয়ে জানালা ভাঙার চেষ্টা করি। যখন আমরা কোনও মতে জানালা ভেঙে বাসটি থেকে বেরোই, সেই সময়ে ভিতরে ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল। অনেকটা উঁচু থেকে আমরা লাফ দিই। দেখতে পাই, অনেক যাত্রীই রাস্তার উপরে অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছেন। আমাদের মধ্যে যাঁদের জ্ঞান ছিল, তাঁরা ওঁদের সরিয়ে নিয়ে যান। কমপক্ষে ১০ জন জানালা দিয়ে পালাতে পেরেছিলেন এবং পাঁচজন অন্য দরজা দিয়ে।’
কুর্নুলের পুলিশ সুপার বিক্রান্ত পাটিল জানান, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসের দ্বিতীয় চালক যাত্রীদের সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু যে চালকের জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল তিনি ভয় পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান। তিনি আরও জানান, দ্বিতীয় চালক স্থানীয়দের সঙ্গে মিলে যাত্রীদের সাহায্য করেছিলেন। এখনও পর্যন্ত ১৯ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে।