ভোটের আগে বাংলার ডাকঘরে গঙ্গাজল বিক্রি বাড়াতে চায় কেন্দ্র
প্রতিদিন | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
সন্দীপ চক্রবর্তী: বাংলার ডাকঘরে গঙ্গাজল বিক্রির কর্মসূচি তিনগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। নির্দিষ্টভাবে কোনও সময় ধার্য না করা হলেও বিধানসভা ভোটের আগে যত বেশি সম্ভব এই সংখ্যা বাড়াতে চায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। ভোটের মুখে হিন্দুত্বর ক্ষেত্রে এই কর্মসূচিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলও।
বিজেপি ও ডাক বিভাগ সূত্রে আপাতত বাংলার ৩৩৭টি ডাকঘরে এই গঙ্গাজল মেলে। সেটি অন্তত এক হাজার পোস্ট অফিসে যাতে ভোটের আগেই সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া যায় তেমনটাই মৌখিক নির্দেশিকা এসেছে। পাশাপাশি বিক্রির ‘টার্গেট’ও দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পোস্ট অফিসে।
যদিও গঙ্গার কাছের ডাকঘরগুলিতে স্বাভাবিকভাবেই বিক্রি কম। ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই ডাক বিভাগ থেকে গঙ্গাজল বিক্রির প্রকল্প চালু করে মোদি সরকার। উদ্দেশ্য ছিল, হিন্দুধর্মের পবিত্র নদীর জল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। মূলত, যে সব স্থানে বা কাছাকাছিও গঙ্গা প্রবাহিত হয়নি, সেখানে এই জলের চাহিদা রয়েছে। গুজরাত বা রাজস্থান, মহারাষ্ট্রের মতো বা দক্ষিণ ভারতের বহু এলাকায় এই জল বিক্রি ভালোই হয়। উত্তরপ্রদেশেও নজরকাড়া বিক্রি রয়েছে। ডাকঘরে যে জল বিক্রি হয় তার লেবেলেই ‘গঙ্গাজল’ লেখা রয়েছে। ২৫০ মিলিলিটার বোতলের দাম ৩০ টাকা। স্বচ্ছ এই গঙ্গাজল গঙ্গার উৎসস্থল গঙ্গোত্রী বা হৃষীকেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়।
তথ্য বলছে, বাংলার মধ্যে পুরুলিয়া ডিভিশনে মোট ২৪টি ডাকঘরে এমন গঙ্গাজল পাওয়া যায়। কলকাতার জিপিও-র বিক্রি বাদ দিলে মধ্য কলকাতার ১১টি, উত্তর কলকাতার ১৪, পূর্ব ও দক্ষিণ কলকাতায় যথাক্রমে ১৭ ও ২০টি পোস্ট অফিসে এই জল মেলে। আসানসোলের যে ১১টি ডাকঘরে গঙ্গাজল মিলছে সেখানেই বিক্রির হার সবথেকে বেশি। মোট ৩৩৭টি কেন্দ্রে আপাতত মিলছে। তবে খুব দ্রুত সেই সংখ্যা ১১০০ করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রের যোগাযোগ মন্ত্রক।
কলকাতার মধ্যে জিপিও, নিউ মার্কেট, বউবাজার, সিআর, মিডলটন, যোগাযোগ ভবনে বেশি বিক্রি। শ্যামবাজারেও মেলে এই গঙ্গাজল। দেখা গিয়েছে যে উৎসবের মরশুমে ও চৈত্র মাসে এর চাহিদা বেশি হয়। এক ডাক আধিকারিক জানিয়েছেন, চৈত্র মাসে একজনকে দেখা গিয়েছে তিনি ৮-১০টি করে কিনেছেন কারণ এগুলি খেয়ে তিনি দিনযাপন করেছেন। মূলত এইসব ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্যই বিক্রি বাড়ানো হচ্ছে বলে ডাক বিভাগের বক্তব্য।