চাঁদপাড়াকে অশান্ত করবেন না, হুঁশিয়ারি বিজেপি বিধায়কের
আনন্দবাজার | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
চাঁদপাড়ায় ক্রমবর্ধমান অশান্তি ও দুষ্কৃতী কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে প্রশাসন ও শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হলেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। শুক্রবার আক্রান্ত চিকিৎসককে দেখতে গিয়ে তিনি তৃণমূলকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন।
গত মঙ্গলবার রাতে গাইঘাটার চাঁদপাড়ায় কালীপুজো দেখতে বেরিয়ে এক ইঞ্জিনিয়ার যুবতী নিগ্রহের শিকার হন বলে অভিযোগ। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর চিকিৎসক দাদা-সহ চার জন। ঘটনায় পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করলেও মূল অভিযুক্ত এখনও অধরা।
স্বপনের দাবি, এই হামলার মূল অভিযুক্ত বুধো নামে এক ব্যক্তি, যে একাধিক অপরাধে জড়িত। তার নেতৃত্বে ওই এলাকায় গড়ে উঠেছে গাঁজা, জুয়া ও অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়া। বহু বার অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। বিধায়কের দাবি, ঘটনায় তৃণমূলের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। তাঁর কথায়, “যে চার জনকে ধরা হয়েছে, তাদের মধ্যে বাপন রায় স্থানীয় তৃণমূল ছাত্র-যুব সভাপতি। এলাকার দুষ্কৃতীদের পিছনে রয়েছেন তৃণমূল যুব নেতা সব্যসাচী ভট্ট। সব্যসাচীর মাথায় রয়েছে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের হাত।” তিনি আরও দাবি করেন, আক্রান্ত চিকিৎসকের উপরে হামলায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারও জড়িত থাকতে পারেন।
চাঁদপাড়ার মানুষকে সতর্ক করে স্বপনের বক্তব্য, “চাঁদপাড়ার মানুষ শান্তিপ্রিয়। কেউ এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করলে মানুষ চুপ থাকবেন না। প্রয়োজনে ঝাঁটা হাতে রাস্তায় নামবেন।”
অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক যুব সভাপতি সব্যসাচী ভট্ট বলেন, “বিজেপি বিধায়ক ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছেন। তিনি নিজেই এক সময়ে মাদক পাচারের মামলায় জেল খেটেছেন। এখন নিজেকে বাঁচাতে রাজনৈতিক নাটক করছেন। ২০২১ সালের ভোটে ভুয়ো শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজ জমা দিয়েছিলেন, আগামী ২০২৬ সালে উনি আর প্রার্থী হতে পারবেন না। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে যা খুশি বলে চলেছেন।”
বিশ্বজিৎ বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে। কার মাথায় কার হাত রয়েছে তা গাইঘাটার মানুষ জানেন। দোষী প্রমাণিত হলে কেউ রেহাই পাবে না।” পুলিশ সূত্রের খবর, চাঁদপাড়ার ঘটনায় তদন্ত চলছে। এক পুলিশ কর্তা বলেন, “ঘটনায় যারা যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।”
এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, গত কয়েক মাসে চাঁদপাড়ায় এ কদল দুষ্কৃতীর দাপট বেড়েছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তরুণী ও স্কুলছাত্রীদের উপরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগও বাড়ছে। সম্প্রতি নির্যাতনের শিকার হওয়া একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন তাঁরা রাজনীতি নয়। নিরাপত্তা চান। তাঁদের দাবি, স্কুল খোলা ও ছুটির সময়ে, রাতে পুলিশি টহল বাড়ানো হোক।