• এসআইআর নিয়ে সহায়তা কেন্দ্র জেলায় জেলায়
    আনন্দবাজার | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
  • গোটা রাজ্যের সব জেলায় দ্বিস্তরীয় বিশেষ সহায়তা কেন্দ্র (হেল্প ডেস্ক) চালু করেই এ রাজ্যে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। প্রধানত সেই সহায়তা কেন্দ্রগুলির লক্ষ‍্য— পরিযায়ী শ্রমিক এবং ভিন্ রাজ্যে কর্মসূত্রে বসবাসকারী এ রাজ‍্যের ভোটারদের সহায়তা প্রদান করা। বিহার এসআইআরের সময়ে সংশ্লিষ্ট ভোটারদের নাম থাকা না-থাকা নিয়ে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বিরোধীদের একের পর এক অভিযোগ সামলাতে হয়েছিল কমিশনকে। সেই দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গ-এসআইআর পর্বে কমিশনের এমন পৃথক পদক্ষেপকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

    গত বুধ এবং বৃহস্পতিবার দিল্লিতে দেশের মুখ‍্য নির্বাচন কমিশনার, দুই নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনের অন্য কর্তারা বৈঠক করেন গোটা দেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের (সিইও) সঙ্গে। দু’দিনের সেই বৈঠক শেষ হতেই জেলা-কর্তারা যে লিখিত বার্তা পেয়েছেন, তাতে বলা হয়েছে, অবিলম্বে জেলাস্তরে দু’টি পর্যায়ে সহায়তা কেন্দ্র খুলতে হবে। তার একটি থাকবে মহকুমা স্তরে, ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) বা মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে। দ্বিতীয়টি থাকবে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (ডিইও) তথা জেলাশাসকের অফিসে। সব জেলাতেই এমন পরিকাঠামো তৈরি হবে। জেলা-কর্তাদের বলে দেওয়া হয়েছে বিশেষ ভাবে পরিযায়ী শ্রমিক এবং অন‍্য রাজ‍্যে কর্মরত ব্যক্তিদের জন‍্য এই সহায়তা কেন্দ্র কাজ করবে।

    প্রসঙ্গত, সরকারি দাবি ধরে নিলে, এ রাজ্যে প্রায় ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক অন‍্যান‍্য রাজ্যগুলিতে বসবাস করেন। প্রশাসনের একাংশের মতে অবশ্য সেই সংখ‍্যাটা দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। আবার শ্রমিক বাদে এ রাজ্যের মানুষ, যাঁরা কার্যসূত্রে ভিন্ রাজ‍্যে রয়েছেন, সেই সংখ্যাটাও নেহাত কম হবে না। তবে সংখ‍্যা যা-ই থাকুক না কেন, এই সহায়তা কেন্দ্রগুলিতে যোগাযোগ করলে সঠিক পথ ধরিয়ে দেওয়া হবে বলে কমিশন সূত্রের বক্তব্য।

    এক জেলা-কর্তার কথায়, “পুজোর ছুটির আগেই পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ‍্য জোগাড় করে রাখতে বলেছিল কমিশন। যাতে এসআইআরের সময়ে প্রত্যেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। কারণ, কর্মসূত্রে অন‍্য রাজ্যে সংশ্লিষ্টরা থেকে গেলে ভোটার তালিকার মূল কাজে তাঁদের বাদ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। রাজনৈতিক ভাবে এ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। ফলে কমিশনের নতুন এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলেই আশা করা যায়।” তবে পরিযায়ী বা বাইরে কর্মসূত্রে থাকা কেউ অনলাইনে এসআইআরে অংশ নিতে চাইলে তা সম্ভব। এমনকি অনলাইনেই ফর্ম জমা করা যাবে।

    জেলা-কর্তাদের পাঠানো বার্তায় কমিশন আরও জানিয়েছে, এখন থেকে সিইও কার্যালয় রোজই খোলা থাকবে। অনুবাদকের দল প্রস্তুত থাকবে সেখানে। এসআইআর ঘোষণার পরে কমিশন যা বিধি স্থির করে দেবে, তা রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বাংলায় অনুবাদ করে বুঝিয়ে দেওয়া হবে সবিস্তারে। সিইও, ডিইও এবং ইআরও স্তরে (রাজ্য এবং জেলা স্তরে) তিনটি দফায় বৈঠক হবে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে। অতিরিক্ত সিইও সমন্বয় রাখবেন সব জেলাশাসক তথা ডিইও-র সঙ্গে। যুগ্ম সিইও-রা সব ইআরও-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। ডিইও, ইআরও এবং এইআরও-রা সমন্বয় রাখবেন বিএলও-দের সঙ্গে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)