মহারাষ্ট্রের চিকিৎসক মৃত্যু তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য, নিজেকে শেষ করার আগে ধৃতের সঙ্গে কথা হয়েছিল তরুণীর! ...
আজকাল | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহারাষ্ট্রের তরুণী চিকিৎসক খুনে গ্রেপ্তার করা হল প্রশান্ত বাঙ্কারকে। ধৃত তরুণী চিকিৎসকের বাড়িওয়ালার ছেলে। অভিযোগ, বাড়িওয়ালার ছেলে ওই তরুণীকে টানা পাঁচ মাস ধরে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে তাঁকে হেনস্থা করেছিলেন। তরুণী চিকিৎসকের হাতে লেখা দুই নামের এক জন প্রশান্ত বাঙ্কার।
ফলটনের একটি সরকারি হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত ছিলেন ওই তরুণী। গত ২৩শে অক্টোবর, বৃহস্পতিবার রাতে একটি হোটেলের ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই তরুণী চিকিৎসকের বাঁ হাতের তালুতে মারাঠিতে শেষ বার্তা লেখা ছিল, সেখানেই তিনি দু'জনের নাম উল্লেখ করেছিলেন। অভিযোগ, এসআই পদমর্যাদার এক পুলিশ আধিকারিক তরুণীকে চার বার ধর্ষণ করেছিলেন। এ ছাড়া, বাড়িওয়ালার পুত্র টানা পাঁচ মাস ধরে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে তাঁকে হেনস্থা করেছেন।
হাতের তালুতে উল্লেখ, ফলটন সিটি থানার সাব-ইন্সপেক্টর গোপাল বাদনেকে ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করা হয়েছে। গোপাল ঘটনার পর থেকেই নিঁখোজ। অভিযুক্ত উভয়ের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং ভুক্তভোগীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
মৃত চিকিৎসকের পরিবারের দাবি, চাপ দিয়ে নানা অনৈতিক কাজ করতে বাধ্য করা হত তরুণীকে। এমনকী, লিখিয়ে নেওয়া হত ভুয়ো মেডিক্যাল রিপোর্টও। মৃতার খুড়তুতো ভাইয়ের অভিযোগ, কোনও রকম শারীরিক পরীক্ষা ছাড়াই ওই সমস্ত রিপোর্ট লিখতে বাধ্য করা হত তরুণীকে। হুমকিও দেওয়া হত। একাধিক বার ডিএসপি-সহ পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের চিঠি লিখেছিলেন তিনি, কিন্তু লাভ হয়নি।
এছাড়াও ভাইয়ের আরও অভিযোগ যে, তরুণী চিকিৎসক এই বছরের শুরুতে, জুন-জুলাই মাসে তিনজন পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, সেখানে তিনি তিনজন পুলিশের নাম উল্লেখ ছিল। যার মধ্যে সেই পুলিশ সদস্যও ছিলেন যিনি তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগগুলি অস্বীকার করে, সাতারা পুলিশের একজন আধিকারিক বলেছেন যে, নির্যাতিতা চিকিৎসক সেই সময় কোনও একটা বিষয়ে অভিযোগ করেছিলেন, তবে তা "অন্য কোনও বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত" ছিল।
একজন শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক সংবাদ সংস্থা পিটিআই'কে জানিয়েছেন যে, আত্মহত্যা করে মারা যাওয়ার আগে, চিকিৎসক অভিযুক্তদের অন্যতম, বাঙ্কারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন এবং তাঁরা দু'জনেই টেক্সট বার্তা বিনিময় করেছিলেন।
রাজনৈতিক ঝড়তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় মহারাষ্ট্রের বিরোধী দল কংগ্রেস ক্ষমতাসীন জোট সরকারকে আক্রমণ করেছে। মহিলাদের সুরক্ষায় সরকার "ব্যর্থ" বলে অভিযোগ তুলেছে। কংগ্রেসের মুখপাত্র শচীন সাওয়ান্ত বলেছেন, "মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশের নেতৃত্বাধীন সরকার মহিলাদের সুরক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।"
উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার মুখপাত্র সুষমা আন্ধারে দাবি করেছেন যে, মামলার তদন্তের জন্য একটি পৃথক বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) গঠন করা উচিত। তবে, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ পুলিশকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।