• আগুন দামের মাঝেই বিরাট সুখবর, ভারতের এই রাজ্যে মিলল বিপুল সোনার হদিস...
    আজকাল | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজস্থানের আদিবাসী অধ্যুষিত বাঁশওয়ারা জেলা আরও একটি সোনার ভাণ্ডারের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ভারতের ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের কর্তারা ঘাটোল তহসিলের কাঁকারিয়া গ্রামে তৃতীয় সোনার খনির উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন। এই আবিষ্কার ভারতের নতুন ‘সোনার রাজধানী’ হিসেবে বাঁশওয়ারার পরিচয়কে আরও শক্তিশালী করেছে। ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা অনুযায়ী, আনুমানিক তিন কিলোমিটার বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা সোনার আকরিকের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এর ফলে ভূকিয়া এবং জগপুরার পরে এই অঞ্চলে তৃতীয় সোনার খনির হদিস মিলল।

    ভূতাত্ত্বিক বিভাগের মতে, প্রাথমিক মূল্যায়নে দেখা গিয়েছে যে ৯৪০.২৬ হেক্টর জমিতে প্রায় ১১৩.৫২ মিলিয়ন টন সোনার আকরিক রয়েছে। যার মধ্যে আনুমানিক ২২২.৩৯ টন খাঁটি সোনা রয়েছে। এটি রাজস্থানে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় সোনার খনির মধ্যে একটি। এছাড়াও, কাঁকারিয়া-গারা এলাকায় ২০৫ হেক্টর জমিতে ১.২৪ মিলিয়ন টন সোনার আকরিক থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। সোনা ছাড়াও, বেশ কয়েকটি মূল্যবান খনিজও উত্তোলনের সম্ভাবনা রয়েছে। 

    রাজস্থান সরকার এর আগে ভুকিয়া-জগপুরা খনির ব্লকগুলি নিলামে তুলেছিল। কিন্তু বিজয়ী সংস্থা প্রয়োজনীয় গ্যারান্টির পরিমাণ জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছিল। এখন নতুন দরপত্র জারি করা হয়েছে, ১৪ অক্টোবর দরপত্র জমা দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে এবং ৩ নভেম্বর দরপত্র খোলার কথা রয়েছে। রাজ্যকে সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারী সংস্থাকে খনির লাইসেন্স দেওয়া হবে।

    কাজ শুরু হলে, বাঁশওয়ারা সেই সব ভারতীয় রাজ্যগুলির তালিকায় যুক্ত হবে যেখানে সোনা তোলা হয়। এর ফলে দেশের সোনার উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান যে, জেলাটি ভবিষ্যতে ভারতের মোট সোনার চাহিদার ২৫ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ করতে পারে। এর ফলে ইলেকট্রনিক্স, পেট্রোকেমিক্যাল, ব্যাটারি এবং অটো যন্ত্রাংশের মতো খাতে বড় বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় যুবকদের জন্য বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হতে পারে এবং বাঁশওয়ারাকে রাজস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তরিত করতে পারে।

    গত মার্চে ওড়িশায় বিপুল সোনার খনির সন্ধান মেলে। ভারতের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (GSI) এর একটি গবেষণায় সুন্দরগড়, নবরঙ্গপুর, আঙ্গুল, কোরাপুট এবং কেওনঝারে উল্লেখযোগ্য খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এবং অন্যান্য অঞ্চলেও অনুসন্ধান চলছে। এই আবিষ্কারগুলি ওড়িশার খনিজ শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। যা রাজ্যে বৃহৎ আকারে বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনের পথ প্রশস্ত করবে। ময়ূরভঞ্জ, মালকানগিরি এবং দেওগড়ের জলডিহি এলাকায় প্রাথমিক জরিপ চলছে, যার ফলাফল ২০২৫ সালের মধ্যে আশা করা হচ্ছে। কেওনঝারের গোপুর-গাজীপুরের খনিগুলিকে ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকীকরণের জন্য মূল্যায়ন চলছে।

    আগস্টে মধ্যপ্রদেশের জবলপুরেও সোনার ভাণ্ডারের হদিস পায় জিএসআই। মধ্যপ্রদেশের জবলপুর জেলার সিহোরা তহসিলে ভূপৃষ্ঠের নীচে বিশাল সোনার মজুদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন ভূতাত্ত্বিকরা। মাহাঙ্গোয়া কেওয়ালরি অঞ্চলে বছরের পর বছর ধরে ভূতাত্ত্বিক জরিপ এবং মাটি পরীক্ষার পর এই আবিষ্কার ভারতের খনিজ অনুসন্ধানের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুসারে, প্রায় ১০০ হেক্টর জমি জুড়ে সোনার মজুদ রয়েছে এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে আকরিকের পরিমাণ এক লক্ষ টনেরও বেশি হতে পারে।
  • Link to this news (আজকাল)