পূর্ণ হতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি। সোমবারই খুলে যাবে বালাসন নদীর উপর তৈরি দুধিয়ার বিকল্প সেতু। দুধিয়া সেতু হল শিলিগুড়ি ও মিরিকের মধ্যে অন্যতম যোগাযোগের পথ। উত্তরবঙ্গের সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই সেতু। সেই কারণে বালাসন নদীর উপর অস্থায়ী সেতু তৈরি হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আগামী সোমবার থেকেই শিলিগুড়ি-মিরিকের মধ্যে যাতায়াতের জন্য এই সেতু খুলে দেওয়া হবে। দুধিয়ায় স্থায়ী সেতুটি তৈরি হতে এখনও প্রায় এক বছর সময় লাগবে। এর আগেই খুলে যাবে বিকল্প সেতু।
সম্প্রতি নিম্নচাপের জেরে ভারী বৃষ্টি ও হড়পা বানে দার্জিলিং জেলার একাধিক এলাকায় ধস নামে। ভেঙে পড়ে দুধিয়া সেতু, যা শিলিগুড়ি থেকে মিরিকের মধ্যে যাতায়াতের অন্যতম পথ। ফলে যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপর্যয়ের ঠিক পরেই তিনি উত্তরবঙ্গে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। দুধিয়া সেতু পরিদর্শনকালে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ‘আমরা ১৫ দিনের মধ্যে অস্থায়ী সেতু তৈরি করব। একইসঙ্গে নতুন একটি স্থায়ী সেতু তৈরির কাজও শুরু হবে।’
সেই প্রতিশ্রুতি রাখতেই মাত্র দুই সপ্তাহে শেষ হয় অস্থায়ী সেতু নির্মাণের কাজ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে পাইপ, বোল্ডার, ইস্পাতের ফ্রেম ও শক্তিশালী কাঠামোর সাহায্যে এই সেতু নির্মিত হয়েছে। আপাতত এই সেতু দিয়ে ছোট ও মাঝারি যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
অন্যদিকে, সেনাবাহিনীর উদ্যোগে ওই এলাকায় একটি বেইলি ব্রিজ তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের অর্থানুকুল্যে পুরনো সেতুর পাশে একটি নতুন কংক্রিটের স্থায়ী সেতু নির্মাণ হচ্ছে। যার খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৫১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। প্রশাসনের লক্ষ্য, আগামী বছরের জুলাই মাসের মধ্যে সেই সেতুর কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে।
অস্থায়ী সেতু তৈরি হওয়ায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা। দীর্ঘদিন ধরে বিপর্যয়ের পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় তাঁদের জীবন-জীবিকা থমকে গিয়েছিল। এখন সেতু চালু হলে ফের প্রাণ ফিরে পাবে দুধিয়া, গয়াবাড়ি ও মিরিকের জনজীবন। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস বাস্তবায়িত হওয়ায় উত্তরবঙ্গের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। যদিও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পরে স্থানীয়দের তৎপরতায় কাজ চালানোর জন্য বালাসন নদীর উপরে বাঁশের দুটি সাঁকো বানানো হয়েছিল। যা খুব একটা সুরক্ষিত ছিল না। সোমবার দুধিয়া সেতুর বিকল্প রাস্তা খুলে গেলে স্বস্তি পাবেন স্থানীয় বাসিন্দারা।