সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঋণগ্রস্ত আদানিদের বাঁচাতে LIC’র অর্থ ব্যবহার করেছে মোদি সরকার। বিস্ফোরক রিপোর্ট করল ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২৫ সালের মে মাসে আদানি গোষ্ঠী যখন ঋণে জর্জরিত। সেসময় এলআইসির তরফে ৩৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর দাবি ছিল, সেসময় আদানিদের প্রতি আস্থা দেখাতে সরকারের কলকাঠিতেই ওই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত। কংগ্রেসও ওই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে তোপ দাগে কেন্দ্রকে। যদিও সেই সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে এলআইসি।
রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বিমা সংস্থা এলআইসি-র টাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানির গোষ্ঠীকে আর্থিক সমস্যা থেকে বাঁচাতে কাজে লাগানো হয়েছে বলে আগেও অভিযোগ উঠেছে। ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টে ফের একই অভিযোগ করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, এ বছরের শুরুতে অর্থাভাবে জর্জরিত আদানি গোষ্ঠীর ঘাড়ে বিপুল ঋণের বোঝা চাপে। সেই সময় মোদি সরকার পরিকল্পনা করে এলআইসি-তে জমা থাকা সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত তহবিল আদানিদের সংস্থায় বিনিয়োগ করে। মার্কিন সংবাদপত্রটির দাবি, কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক তাদের আর্থিক পরিষেবা বিভাগ, LIC এবং NITI Aayog-এর সমন্বয়ে আদানি গ্রুপের বন্ড এবং ইক্যুইটিতে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে। সেই টাকাতেই ৫৮৫ মিলিয়ন ডলারের বন্ড ইস্যু করে আদানি পোর্টস। সরকারের কলকাঠিতেই ওই বিনিয়োগ।
ওই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রকে কোণঠাসা করা শুরু করেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির। কংগ্রেসের প্রচার বিভাগের প্রধান জয়রাম রমেশের দাবি, “মোদানির (মোদি+আদানি) যৌথ উদ্যোগ কীভাবে ভারতীয় জীবন বীমা কর্পোরেশন (এলআইসি) এবং এর ৩০ কোটি পলিসিধারকদের সঞ্চয়ের পদ্ধতিগতভাবে অপব্যবহার করেছে।” তাঁর দাবি, এটা বিরাট বড় দুর্নীতি। যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে এর তদন্ত করা উচিত।
যদিও এলআইসি এবং আদানি, দুই সংস্থাই সব অভিযোগ খারিজ করেছে। এলআইসি বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, “এলআইসি-র লগ্নির সিদ্ধান্ত অন্য কারণ দ্বারা প্রভাবিত বলে অসত্য, ভিত্তিহীন দাবি করা হয়েছে একটি প্রতিবেদনে। সেখানে যেমন অভিযোগ তোলা হয়েছে, আদানি গোষ্ঠীতে টাকা ঢোকানোর উদ্দেশ্যে তেমন কোনও নথি বা পরিকল্পনা এলআইসি তৈরি করেনি।’ আদানি গোষ্ঠীরও দাবি, তাঁদের সংস্থায় এলআইসির বিনিয়োগের জন্য সংস্থা তৃতীয় কারও সাহায্য নেয়নি। কোনও রকম সরকারি হস্তক্ষেপও অস্বীকার করেছে সংস্থা। তাছাড়া, এলআইসির মতো বৃহৎ পুঁজির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এই ধরনের বেসরকারি সংস্থায় বিনিয়োগ করেই থাকে। এতে নতুন কিছু নেই। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের বক্তব্য, এই বিনিয়োগের নেপথ্যে রাজনীতি খোঁজা অহেতুক। সব মিলিয়ে আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার সংস্থায় ৩৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে LIC’র। এত বড় বিমা সংস্থার নিরিখে হিসাব করলে সংখ্যাটা একেবারেই সামান্য।