কেরালা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ‘খুন’, ওড়িশায় মিলল বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ!
প্রতিদিন | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের এক যুবক। বাড়ি ফেরার পথে ট্রেন থেকে তিনি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন! পরে উদ্ধার হল তাঁর মৃতদেহ। মুখে পাথর গুঁজে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশায় ওই দেহ মিলেছে বলে খবর। মৃতের নাম হাঞ্জালা ফিরদৌস। ওই পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়ি আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার ময়রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের লছমনডাবরি গ্রামে।
মৃতের পরিবারের দাবি, হাঞ্জালা দেড় মাস আগে কেরালায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েছিলেন। গত ১২ অক্টোবর কেরালার কল্লোল স্টেশন থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন বছর ২১ বয়সের ওই যুবক। ১৩ তারিখ সন্ধ্যাতেও তাঁর সঙ্গে বাড়ির লোকেরা কথা বলেছিলেন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। সেসময় তিনি ট্রেনে ছিলেন। কিন্তু তারপর থেকে আর তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি! মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি! ১৫ তারিখেও বাড়িতে না পৌঁছনোয় জিআরপির স্থানীয় থানায় ওই পরিবার অভিযোগ জানায়।
গতকাল, শুক্রবার ওই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। ওড়িশার ভুবনেশ্বরে গঞ্জম জেলায় দেহ পাওয়া গিয়েছে। ওড়িশা পুলিশ বাড়িতে ওই দুঃসংবাদ জানিয়েছে। হাঞ্জালাকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। তাঁর মুখে পাথর ভরা ছিল! গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো ছিল বলে খবর। কিন্তু কী কারনে খুন? ব্যক্তিগত কোনও শত্রুতা নাকি জিনিসপত্র লুটের জন্য খুন? সেই প্রশ্ন উঠেছে। মৃত শ্রমিকের মাসি নুরজাহান বেগম বলেন, “আমরা ওড়িশা থানা থেকে জানতে পেরেছি যে হাঞ্জালাকে খুন করা হয়েছে। সিআইডি তদন্ত দাবি করছি। ভিনরাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা এভাবে অত্যাচারের শিকার হলে সাধারণ মানুষ বাঁচবে কীভাবে? ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।”
বাড়িতে মৃত শ্রমিকের আট মাসের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী রয়েছেন। শোকে পাথর পরিবারের সদস্যরা। মৃতদেহ আনতে ফালাকাটা থেকে ওই শ্রমিকের বাবা ও পরিবারের অন্যান্যরা ভুবনেশ্বর রওনা হয়েছেন। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আতিয়ুর রহমান বলেন, “আমরা সিআইডি তদন্ত দাবি করছি। মৃত শ্রমিক পরিবারের পাশে থাকতে হবে।” আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “বেশ কয়েকদিন থেকে ওই শ্রমিক নিখোঁজ ছিল। এখন মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। মৃত শ্রমিকের পরিবারকে সবরকম সহযোগিতা করা হচ্ছে।”