• অন্তর থেকে ডাকলে ফেরান না দেবী! খাস মধ্য কলকাতাতেই শতাব্দীপ্রাচীন জগদ্ধাত্রী মন্দিরে চলে নিত্যপুজো
    প্রতিদিন | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজোয় লক্ষ লক্ষ জনসমাগম হয় চন্দননগর ও কৃষ্ণনগরে। দিন কয়েক বাদেই পুজো। শেষমুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে মণ্ডপে। খাস কলকাতা থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতেই বারোয়ারি জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়েছে বেশ কয়েক বছর ধরে। তবে কলকাতায় স্থায়ী জগদ্ধাত্রী মন্দিরও রয়েছে। সেই মন্দির জাগ্রত বলেই পরিচিত। শহরের ইট-কাঠ-পাথরের ইতিহাসের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এই প্রাচীন মন্দিরের কাহিনি। প্রাচীন বলার কারণও আছে। একশো বছরের পুরনো এই মন্দিরের বয়স। নিত্য পুজোর আয়োজন হয় এখানে। কিন্তু কোথায় আছে এই মন্দির?

    মধ্য কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ইতিহাস। ব্রিটিশ আমল থেকে বহু মন্দিরও রয়েছে অলিগলিতে। ইতিহাস খুঁজে তেমনই এই জগদ্ধাত্রী মন্দিরের হদিশ পাওয়া যায়। মধ্য কলকাতার সার্পেন্টাইন লেন। শিয়ালদহ স্টেশনে হাঁটাপথেই পৌঁছে যাওয়া সম্ভব এখানে। শিয়ালদহ স্টেশনের অদূরেই সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার। এই এলাকা লেবুতলা বলেই পরিচিত। ওই এলাকাতেই সার্পেন্টাইন লেন। ওই এঁদো গলিতে ঢুকে কিছুটা হাঁটলেই পৌঁছে যাওয়া যায় ওই শতাব্দীপ্রাচীন মন্দিরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এই মন্দির সদাজাগ্রত বলেই পরিচিত।

    এলাকার মানুষজন এই মন্দিরকে ঠাকুরবাড়ি বলেই চেনেন। তিন খিলানের উঁচু বেদির উপর রয়েছে এই মন্দির। জগদ্ধাত্রী মন্দিরটি পশ্চিমমুখী। দালানের উপর এই মন্দিরে বসার জায়গাও আছে। ওই দালানেই রয়েছে একাধিক স্তম্ভ। সেই স্তম্ভগুলিই মন্দিরের ছাদটিকে ধরে রেখেছে। মন্দিরের সামনেই রয়েছে উঠোন। আছে বেশ কয়েকটি ঘরও। আদ্যোপান্ত ওই মন্দিরটি ছিমছাম। গর্ভগৃহের দরজার দিকে চোখ পড়লেই দেখা যাবে দু’পাশের দেওয়ালে রয়েছে দুটি ভাস্কর্য। আর গর্ভগৃহে তাকালে ভক্তিতে চোখ আটকে যাবেই। সেখানেই দেবী অধিষ্ঠান করছেন। মন্দিরে মৃন্ময়ী মাতৃপ্রতিমা নয়। অষ্টধাতুর দেবীর মূর্তি সিংহের উপর উপবিষ্ট। ধুপ-ধুনোর গন্ধ মন্দিরের আনাচাকানাচে ছড়িয়ে। নিত্যপুজো হয় মন্দিরে।

    কলকাতায় সেসময় জমিদারদের আমল। ইংরেজদের দাপট রয়েছে মধ্য কলকাতায়। শোনা যায়, ওই এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন কেদারনাথ দাস। তিনিই এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সময়টা ছিল ১৮৮৮ সাল। বাংলায় ১২৯৪ বঙ্গাব্দ। শোনা যায়, পূর্ণিমার দিন ১২ মাঘ এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পরে সেই মন্দিরের কথা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। ইংরেজরা দেশ ছেড়েছে। কালের নিয়মে ঘটে গিয়েছে বহু ঘটনা। মন্দিরের প্রভাবও বাড়তে থাকে। দেবী এখানে জাগ্রত। সেই কথাও প্রচলিত আছে। স্থানীয়রা তো বটেই দূরদূরান্ত থেকেও পুজো দেওয়ার জন্য মন্দিরে উপস্থিত হন বহু মানুষ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)