মধ্যপ্রদেশের পর পশ্চিমবঙ্গ, কার্বাইড গান-এর প্রভাবে দৃষ্টিশক্তি হারাতে চলেছে ৮ কিশোর ও তরুণ...
আজকাল | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের ভূপালের সঙ্গে জড়িয়ে গেল এরাজ্যের মালদার নাম। কার্বাইড গান বিস্ফোরণে দৃষ্টিহীন হতে চলেছে বেশ কিছু কিশোর ও তরুণ। মালদা জেলার এরকম আট কিশোর ও তরুণের সন্ধান মিলেছে বলে জানা গিয়েছে যারা কার্বাইড গানের বিস্ফোরণে দৃষ্টি হারানোর পথে। যা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন জেলার চক্ষু চিকিৎসকরা।
জানা গিয়েছে, মালদার এক বিশিষ্ট চক্ষু চিকিৎসক সৌগত পোদ্দারের কাছে এই দুর্ঘটনায় আহত দু'জনের চিকিৎসা চলছে। শুক্রবার মালদা শহরের খ্যাতনামা চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেবদাস মুখার্জির কাছে চোখ দেখাতে এসেছিল বছর ১৩-র কিশোর আকাশ বিশ্বাস। তার বাড়ি গাজোলের এক প্রত্যন্ত গ্রামে। কার্বাইড গান-এর বিস্ফোরণে তার চোখে আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছে সে। বছর ২০-র আরেক তরুণ এসেছিল চোখের চিকিৎসা করাতে। তাকে পরীক্ষার পর কীভাবে চোখে আঘাত পেয়েছে জানতে চাইলে ওই তরুণ জানায়, তাদের গ্রামেরই একটি ছেলে সেই কার্বাইড গান তৈরি করেছিল। তাতে আগুন ধরে যায়। এরপর আগুন নেভানোর সময় হাত লেগে যায় কার্বাইডে। ভুলবশত সেই হাত চোখে লাগে। তারপর থেকেই সমস্যা বেড়ে যায়। এখন চোখে ঝাপসা দেখছে।
মালদা শহরের আরও এক চক্ষু চিকিৎসক অমিতেন্দু সাহা জানান, ''ক্যালসিয়াম কার্বাইড আর জলের বিক্রিয়ায় তৈরি হয় দাহ্য গ্যাস অ্যাসিটিলিন। তার জেরেই বিস্ফোরণ ঘটছে। আর তা চোখে গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দৃষ্টি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।" জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখনও পর্যন্ত এরকম ৮ জনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যাদের চোখ এই কার্বাইড গান-এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
উল্লেখ্য, আনন্দের উৎসব দীপাবলিতে এবছর দুঃখ নিয়ে এসেছে এই কার্বাইড গান বা দেশি খেলনা বন্দুক। মধ্যপ্রদেশে ইতিমধ্যেই এর প্রভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে ৩২০ জন। ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে মধ্যপ্রদেশ সরকার ইতিমধ্যেই এই বাজি নিষিদ্ধ করেছে। চিকিৎসকদের মতে, যাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে তাদের ক্ষেত্রে পুরোপুরিভাবে দৃষ্টিশক্তির জন্য মাস ছয়েকের মতো লাগতে পারে। এই ধরনের দেশি বন্দুক ইউটিউব দেখে অনেকেই তৈরি করেছে বলে জানা গিয়েছে। উপকরণ জোগাড় করে বেশ কিছু লোক এই বন্দুক তৈরি করে হয় নিজে ব্যবহার করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অথবা শিশু বা প্রিয়জনের হাতে তুলে দিয়ে তাদের বিপদে ফেলেছেন। চক্ষু বিশেষজ্ঞরা এবিষয়ে সতর্ক করেছেন অভিভাবকদের।