• আর কয়েক ঘণ্টা, প্রবল গতিতে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মান্থা, বাংলায় অতি ভারী বৃষ্টি কবে থেকে? জানুন আবহাওয়ার মেগা আপডেট ...
    আজকাল | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: আর কয়েক ঘণ্টা। আবারও দুর্যোগের কালো মেঘ ঘনিয়ে আসছে বাংলার আকাশ। প্রবল গতিতে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মান্থা। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে চরম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। বাদ যাচ্ছে না বাংলাও। ঘূর্ণিঝড় মান্থা স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময়েই বাংলাতেও দুর্যোগের ঘনঘটা। একটানা ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বাংলা জুড়ে। 

    ভারতের মৌসম ভবন সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ইতিমধ্যেই। আগামিকাল রবিবার এটি শক্তি বাড়িয়ে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপর পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম এবং মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এই ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ থাকবে পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিক। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে মান্থা। এই নাম দিয়েছে থাইল্যান্ড। 

    আবহাওয়া দপ্তর আরও জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থা (Cyclone Mantha) স্থলভাগে আছড়ে পড়বে। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ল্যান্ডফল করবে কাকিনাড়াতে। মঙ্গলবার ল্যান্ডফলের সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় পর্যন্ত হতে পারে। 

    আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী সোমবার, অর্থাৎ ২৭ অক্টোবর চেন্নাই, তিরুভাল্লুর এবং রানিপেট জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ওই দিন এলাকাগুলিতে অতি ভারী থেকে অতি প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি উপকূলজুড়ে দমকা হাওয়া বইতে পারে। যা ঘণ্টায় ৬০–৭০ কিমি বেগে পৌঁছতে পারে। 

    এই ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা এমন এক সময়ে দেখা দিয়েছে, যখন তামিলনাড়ুতে উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু পুরোপুরি সক্রিয়। আইএমডি জানিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ জেলায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে কোয়েম্বাটুর, নীলগিরি, এরোড, তিরুপ্পাত্তুর, ভেল্লোর এবং রানিপেটে। আগামী সপ্তাহেও তামিলনাড়ুতে চরম দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে।

    বাংলার আবহাওয়ার পূর্বাভাস: 

    আগামী সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম , পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী মঙ্গলবার থেকে বাড়বে বৃষ্টির দাপট। ওইদিন থেকে ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা জারি রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে। ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। জারি রয়েছে হলুদ সর্তকতা। 

    আগামী বুধবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা জারি রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া ও ঝাড়গ্রামে। ওইদিন সব জেলাতেই ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। 

    আগামী বৃহস্পতিবার বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও পশ্চিম বর্ধমানে ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা জারি রয়েছে। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী শুক্রবারেও দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। 

    আজ উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার ও সোমবার উত্তরবঙ্গের সব জেলায় শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে। আবার মঙ্গলবার সব জেলায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। আগামী বুধবার উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। 

    আগামী বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে জলপাইগুড়ি, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরে। বাকি জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী শুক্রবার জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা জারি রয়েছে। 

    আগামী মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর থেকে বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত উপকূলবর্তী এলাকায় ৫৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তাল থাকবে সমুদ্র। এই তিনদিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে সমুদ্র থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 
  • Link to this news (আজকাল)