হুমায়ুন কবীরের বিস্ফোরক মন্তব্যে বহরমপুরে রাজনৈতিক উত্তেজনা
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তাঁর মন্তব্যে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তিনি সম্প্রতি বলেন, ‘দরকারে অধীর চৌধুরীর সঙ্গে সমঝোতা করব’, যা তাঁর আগের অবস্থান ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে বেশ অপ্রত্যাশিত বলে মনে করা হচ্ছে।
হুমায়ুন কবীরের নিশানা এখন কান্দির বিধায়ক ও বহরমপুরের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার। হুমায়ুন দাবি করেছেন, অপূর্ব সরকার জেলা থেকে দলের নেতা ও বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ‘ইডি’র মাধ্যমে গ্রেপ্তার করিয়েছেন। তিনি বলেন, তার কাছে এই নিয়ে ‘সব তথ্য ও ডকুমেন্ট’ আছে এবং সময় হলেই তা প্রকাশ করবেন।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে অপূর্ব সরকার বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসকে যদি কেউ চ্যালেঞ্জ করে, সেই চ্যালেঞ্জ বিনয়ের সঙ্গে গ্রহণ করছি।’ কিন্তু অধীর চৌধুরীর প্রসঙ্গ তুলে দলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে হুমায়ুন পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে সব সম্ভব। যে অধীর চৌধুরীকে ২০২৪-এ হারিয়েছি, দরকার হলে তাঁর সঙ্গে সিট অ্যাডজাস্টমেন্ট করব। কিন্তু অপূর্ব সরকারকে সাধারণ পাবলিক করে দেব।’
হুমায়ুন আরও স্পষ্ট করে বলেন, তিনি রেজিনগরেও দাঁড়াবেন, কান্দিতেও দাঁড়াবেন। না পারলে আরেক হুমায়ুনকে এনে অপূর্ব সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করাবেন। এভাবে দেখিয়ে দেবেন ‘কত ধানে কত চাল’। অভিযোগ, হুমায়ুন বারবার দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অপূর্ব সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরলেও দল কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ নেননি। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এবার উপগ্রহে যেতে হবে। আর কোন সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে যাব, গিয়ে কাজ হয়নি বলেই তো মুখ খুলছি।’
হুমায়ূনের এই মন্তব্যের পর অপূর্ব সরকারও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, হুমায়ুনের কথায় সাধারণত কেউ পাত্তা দেয় না। ফুটপাথে বসে কে কী বলছে, তা তাঁর গুরুত্বের মধ্যে নেই।
বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠানকেও ব্যবহার করছেন বলে অপূর্বর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন হুমায়ুন। কাঁথি পুরসভার অনেক হিন্দু কাউন্সিলর ভোট দেননি। কেন তা জানা দরকার বলে তিনি দাবি করেন।
হুমায়ুনের দলবিরোধী মন্তব্যের পর তৃণমূলের শৃঙ্খলা কমিটি কী পদক্ষেপ নেবে, তা নিয়ে তিনি মাথা ঘামাচ্ছেন না বলে দাবি করেন। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘জানি না, ওসব নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না।’