সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রের দেওয়া পিএমশ্রী অনুদান গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত যেন কেরল সিপিএমের জন্য শাঁখের করাত! কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ওই টাকা গ্রহণ করায় রীতিমতো রেগে লাল এলডিএফের অন্যতম জোটসঙ্গী সিপিআই। ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভার বৈঠক বয়কট করেছেন সিপিআইয়ের চার মন্ত্রী। এমনকী তাঁরা ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন বলেও খবর।
কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতায় সবচেয়ে বেশি সরব যে রাজ্যগুলি, সেগুলির মধ্যে একেবারে প্রথমের সারিতে কেরল। সে রাজ্যের সিপিএম সরকার স্পষ্ট ঘোষণা করে দিয়েছে, কেরলে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর হবে না। কিন্তু সেই বাম সরকারই আবার কেন্দ্রের দেওয়া পিএমশ্রী অনুদান গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা নিয়ে জোর বিতর্ক। কেন্দ্র আগে জানিয়ে দিয়েছে, যে সব রাজ্য ‘পিএমশ্রী’ প্রকল্পের অনুদান গ্রহণ করবে, সেই রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রের সঙ্গে ‘মৌ’ চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। বামেদের অন্যতম শরিকদল সিপিআই মনে করছে, মৌ স্বাক্ষর করার অর্থ ঘুরপথে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করা। কারণ, ওই মৌ চুক্তিতে এমন বহু শর্ত আছে যা জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রস্তাব করা হয়েছিল। ‘পিএমশ্রী’র টাকা গ্রহণ করার অর্থ ঘুরিয়ে জাতীয় শিক্ষানীতির সেই শর্তগুলি মেনে নেওয়া।
সূত্রের খবর, পিএমশ্রী নিয়ে সিপিআই এতটাই ক্ষুব্ধ যে ভোটের কয়েক মাস আগে তাঁরা মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথাও ভাবছে। সেক্ষেত্রে কেরলের বাম সরকারের অস্তিত্বও সংকটে পড়ে যেতে পারে। সমস্যাটা হল এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন কেরলে নেই। তিনি বিদেশে। তাঁর অনুপস্থিতিতে শরিকের গোঁসা থামানোটা বেশি চ্যালেঞ্জের হয়ে যাচ্ছে সিপিএমের জন্য। শোনা যাচ্ছে, কেরল মন্ত্রিসভায় সিপিআইয়ের চার মন্ত্রী ইতিমধ্যেই ইস্তফা দিতে চেয়েছেন। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও তাঁরা যোগ দেননি। সিপিআই রাজ্য সম্পাদক বিনয় বিশ্বম বলছেন, “মন্ত্রিসভাকে না জানিয়েই ওই টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এত তাড়াহুড়োটা কীসের?”
সিপিএম অবশ্য চড়া সুরেই কথা বলছে। দলের রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দনের বক্তব্য, “এই টাকাটা রাজ্যের প্রাপ্য। তাই কেন্দ্রের থেকে সেটা দ্রুত আদায় করাই আমাদের লক্ষ্য।” কিন্তু তাতে ক্ষোভ প্রশমন হচ্ছে না সিপিআইয়ের। শেষে কেরলে বামেদের আহ্বায়াক টি পি রামকৃষ্ণণকে বলতে হয়েছে, “বিজয়ন ফিরলেই সিপিআইয়ে সঙ্গে আলোচনায় বসবে সিপিএম।”