ইউটিউব দেখে কার্বাইড গান তৈরির বিপদ, আচমকা ফেটে দৃষ্টি হারাল তমলুকের শিশু
প্রতিদিন | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
সৈকত মাইতি, তমলুক: মালদহের পর এবার তমলুক। মধ্যপ্রদেশের আতঙ্ক ফিরিয়ে এরাজ্যেও অভিশাপ হয়ে দাঁড়াল কার্বাইড গান! ইউটিউব দেখে এই হাত বন্দুক তৈরি করেই বিপদ। আচমকা তা ফেটে দৃষ্টি হারাল তমলুকের তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্র। এই ঘটনায় প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়েছে তমলুকের হরশংকর এলাকায়। মালদহে ইতিমধ্যেই শিশু, কিশোর-সহ দৃষ্টি হারানোর পথে অন্তত ৯ জন। এনিয়ে চিন্তা বাড়ছে পরিবারের। চিকিৎসকরা বারবার সতর্ক করছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র নিশিকান্ত রানা। তার বাবা স্থানীয় বাজারের একটি গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানে কর্মী হিসেবে কাজ করেন। সংসারের অভাব সামাল দিতে স্ত্রী তন্দ্রা রানা বিড়ি বাঁধেন। তাঁদের দুই ছেলে ? ছোটজন নিশিকান্ত স্থানীয় বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র, বড় ছেলে নিশীথ পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। এবারের কালীপুজোয় দুই ভাই মিলে হাত বন্দুক বা কার্বাইড গান তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। পরিবারের দাবি, ইউটিউব দেখে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি কার্বাইড গান তৈরি করতে সফল হয় দু’ভাই। আর ওই কার্বাইড গান ব্যবহার করেই তারা বুধবার থেকে মেতে উঠেছিল তারা। কিন্তু শুক্রবারই তাদের আনন্দে তাল কাটে। সকালে প্লাস্টিক বোতল দিয়ে তৈরি করা ওই কার্বাইড গানটি আচমকা ফেটে যায়। আর তাতেই গুরুতর জখম হয় নিশিকান্ত। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়।
নিশিকান্তর মা তন্দ্রাদেবী বলেন, ”ফোনে ইউটিউব দেখে ওরা নতুন নতুন হাতের কাজ করায় উৎসাহ পাচ্ছিল। কিন্তু এভাবে প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার করে কার্বাইড গান তৈরিতে আমরা বাধা দিয়েছিলাম। আর সেই বাধা না শোনায় ছেলের এত বড় ক্ষতি হয়ে গেল! আমরা ভাবতেও পারছি না।” প্রতিবেশী সুশান্ত সামন্তের কথায়, ”দুই ভাই এমনিতে বেশ চনমনে। কিন্তু তাদের এই অতি উৎসাহ এখন এলাকায় বিভীষিকা হয়ে উঠেছে।” চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিশিকান্তর ডান চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, দৃষ্টিশক্তি হারানোর প্রবল আশঙ্কা। প্রসঙ্গত, দীপাবলিতে মধ্যপ্রদেশের একের পর এক এই কার্বাইড গান বিস্ফোরণের ঘটনায় বহু শিশুর দৃষ্টিশক্তি হারানোর খবর এই মুহূর্তে ভাইরাল। এবার বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে একই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।