পাঞ্জাবে ছাড় কিন্তু বাংলা ব্রাত্য! বন্যাত্রাণে সাংসদ তহবিল নিয়ে পক্ষপাতের অভিযোগ তৃণমূলের
প্রতিদিন | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: অতিবৃষ্টির জেরে বন্যাবিধ্বস্ত পাঞ্জাব-সহ দেশের একাধিক রাজ্য। ছাড় পায়নি বাংলাও। উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যা বহু মানুষের প্রাণ ও সম্পত্তিহানির কারণ হয়েছে। তবে দেশের বাকি রাজ্যগুলি সাহায্য পেলেও বাংলার ক্ষেত্রে লাগাতার বৈষম্যের অভিযোগ উঠছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। এবার সেই অভিযোগে সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তাঁর দাবি, সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে দেশের সাংসদরা তাঁদের সাংসদ তহবিলের এক কোটি টাকা পাঞ্জাবে অনুদান হিসেবে দিতে পারবেন। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, পাঞ্জাবে তহবিলের অর্থ ব্যয়ের ছাড় থাকলেও বাংলায় নয় কেন?
আসলে সাংসদ বা বিধায়কদের তহবিলের অর্থ ব্যয়ের অনুমতি থাকে শুধুমাত্র নিজ এলাকার উন্নয়নে। নিজের এলাকার বাইরে অন্য কোথাও এই অর্থ ব্যয় নিয়ম বিরুদ্ধ। সুখেন্দু শেখরের প্রশ্ন তুলেছেন, পাঞ্জাবের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম কেন্দ্র শিথিল করা হলে বাংলার ক্ষেত্রে নয় কেন? এদিন সোশাল মিডিয়ায় মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে তৃণমূল সাংসদ লেখেন, ‘সারা দেশের সাংসদদের পাঞ্জাবের বন্যা ত্রাণের জন্য সাংসদ তহবিল থেকে ১ কোটি টাকা ব্যয় করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু কেন পশ্চিমবঙ্গের জন্য এই নিয়ম শিথিল করা হচ্ছে না যেখানে ‘উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে’ প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যায় মানুষের ঘরবাড়ি এবং ফসলের বিপুল ক্ষতি হয়েছে?’
উল্লেখ্য, প্রবল বর্ষণ এবং ভুটান থেকে ধেয়ে আসা জলে এ বছর ভয়ংকর অবস্থা হয়েছে উত্তরবঙ্গে। বিপর্যয় কাটিয়ে অবশ্য রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় সেরে উঠেছে পাহাড়। কিন্তু এজন্য কেন্দ্রের তরফে কোনও সাহায্যই করা হয়নি। এই নিয়ে আগেই সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিজে তো বটেই সকল সাংসদ, বিধায়ক ও সাধারণ মানুষকে ত্রাণ তহবিলে সাহায্য করার আর্জি জানিয়েছেন। এদিকে কেন্দ্রের এই নয়া নীতিতে প্রশ্ন উঠছে, পাঞ্জাবের গোটা দেশ থেকে সাংসদদের সাহায্যের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বাংলার ক্ষেত্রে রাজ্যের সাংসদদের উত্তরবঙ্গের স্বার্থে এই ছাড় দিতে পারত কেন্দ্র। তা না করে এভাবে বাংলার প্রতি বঞ্চনা করার অর্থ কী?
শুধু তাই নয়, দেশের বাকি রাজ্যকে কেন্দ্রের তরফে ত্রাণের টাকা দেওয়া হলেও বাংলায় কোনও টাকাই বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। এই ঘটনায় আগেই সরব হয়েছে তৃণমূল। শাসক দল অভিযোগ তুলেছিল, ‘ভয়ঙ্কর বন্যা এবং ভূমিধসের কবলে উত্তরবঙ্গ। জীবন, ঘরবাড়ি এবং জীবিকা সম্পূর্ণ ধূলিস্যৎ হয়ে গিয়েছে। সেই সময়েও কেন্দ্র একেবারে নীরব। এক টাকাও রাজ্যের জন্য বরাদ্দ করা হয় হয়নি।’ কিন্তু মহারাষ্ট্র এবং কর্নাটকের বন্যা মোকাবিলায় দ্রুত ১,৯৫০.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বাংলার দাবিকে ঠান্ডা ঘরে রেখা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের।